একুশের নির্বাচনের আগে ‘খেলা হবে’ স্লোগান তুলে বিজেপি ও বিরোধীদের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ করেছিল তৃণমূল। দেবাংশু ভট্টাচার্যের জন্য এই স্লোগানটি বাংলায় খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু, খেলা হোবা স্লোগানের মূল স্রষ্টা এবারও বাংলায় বেশ জনপ্রিয়। শামীম ওসমানকে নিয়ে উন্মাদনার শেষ নেই।
শামীম ওসমান হলেন বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবীদ। তিনি নারায়ানগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। শামীম ওসমান নারায়নগঞ্জ মানুষের কাছে খুব ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার একজন মানুষ। নারায়ানগঞ্জের মানুষের ভাঘয়ের সার্বিক য়ন্নয়নের জন্য তিনি সর্বদা কাজ করে যাচ্ছেন।
২০০১ সালের ‘মহাযুদ্ধ’-এর আগে রাজনৈতিক মঞ্চগুলি ‘খেলা হবে’ স্লোগানে ভরে গিয়েছিল। তরুণ তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যের আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তার সঙ্গে এই স্লোগানের অনেক সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান, যিনি প্রথম ‘খেলা হবে’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন, তিনি পশ্চিমবঙ্গেও কম জনপ্রিয় নন।
কে শামীম ওসমান যিনি প্রথম ‘খেলা হবে’ স্লোগান তোলেন?
শামীম ওসমান আওয়ামী লীগের একজন নেতা। এক রাজনৈতিক সভায় তিনি বলেন, “খেলা শেখায় কে? আমরা শিশু খেলোয়াড়। খেলা হবেই।” তিনি যে শেষ দুটি শব্দ উচ্চারণ করেছিলেন তা ১৯৮০-এর দশকে বঙ্গীয় বিধানসভা নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। ১৬ আগস্ট মঙ্গলবার রাজ্য জুড়ে ‘খেলা হবে দিবস’ উদযাপন করছে তৃণমূল।
আর এ প্রসঙ্গে বারবার উঠে আসছে শামীম ওসমানের নাম। কে এই শামীম? তার মা নাগিনা জোহা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। অনেকেই জেনে অবাক হবেন যে নগিনদেবীর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে। অর্থাৎ ‘খেলা হবে’-এর স্রষ্টার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাহমুদ এ জাইদিও তাঁর আত্মীয়। পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকলেও বাংলাদেশের এই নেতার পরিবারের কেউ চাননি তিনি রাজনীতিতে যোগ দেবেন।
শামীম বলেন, বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের প্রাণনাশকাণ্ড তার জীবনের গতিপথ বদলে দিয়েছে। ‘খেলা হবে’ স্লোগানটি বাংলায়ও বেশ জনপ্রিয়। শামীমের প্রতিক্রিয়া কী?
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি শুনেছি যে এই স্লোগানটি সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব জনপ্রিয় হয়েছে। এই স্লোগানটি এত জনপ্রিয় হওয়ার পর আমি খুশি। আমি এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।” এই স্লোগানের কারণে তিনি বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এ বছর কলকাতায় এসেছেন তিনি। সে সময় কলকাতার অনেকেই তাকে দেখে খুব মুগ্ধ হয়েছিলেন। স্ত্রী সালমা ওসমানের সঙ্গে নিউমার্কেট এলাকায় বেরিয়েছিলেন তিনি। এ সময় কলকাতার বেশ কয়েকজন তাকে দেখে সেলফি তুলতে চেয়েছিলেন। এই জনপ্রিয়তায় তিনি অভিভূত হন।
বাংলার রাজনীতিতে ‘খেলা হবে’ স্লোগানকে জনপ্রিয় করার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন তৃণমূল যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে শোনা গেল এই স্লোগান। এমনকি তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে ‘খেলা হবে’ স্লোগানের সমালোচনা করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
প্রসঙ্গত, মানুষের ভালোবাসা ও অসীম শ্রদ্ধার কারণে শামীম ওসমান জীবনে সফলতা অর্জন করেছেন। তার বলা খেলা হবে কথাটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। তবে এই কথার উদ্ভাবক কে সেই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।