দেড় দশকের বেশি সময় ধরে রুপালি পর্দায় নেই নব্বই দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনাজ। বিখ্যাত পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনী’ ছবির মাধ্যমে ঢালিউডে অভিষেক ঘটে এই অভিনেত্রীর। বেশ কিছু ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি তার জনপ্রিয়তার শীর্ষে সিনেমা ছেড়ে চলে যান।
বিয়ের পর স্বামী, সংসার ও সন্তান নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি নাটকেও অভিনয় করেছেন শাবনাজ। এখন তাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। বিয়ের দুই বছর পর ছবিতে অভিনয় করেন শাবনাজ।
এদিকে দুজনের বিয়ের পর নাঈমের বাবা মারা যান। নাঈমের খুব মন খারাপ থাকে সে সময় । তখন শাবনাজকে সবচেয়ে বেশি স্বামীর পাশে থাকতে হয়েছে।
সম্প্রতি গণমাধ্যমকে শাবনাজ বললেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠেই ময়না, ময়না (শাবনাজকে ময়না বলে ডাকেন নাঈম) বলে ডাকাডাকি করে অস্থির করে ফেলত নাঈম। আমাকে ওর সামনে বসে থাকতে হতো। আমার সঙ্গটা তখন ওর বেশি দরকারও ছিল। আমরা অনেক গল্প করতাম, আড্ডা দিতাম। নাঈম কাজও কমিয়ে দেয়। আমিও হাতে থাকা কিছু ছবির কাজ করে নিজেকে গুটিয়ে নেই।’
মূলত ‘বিষের বংশী’ ছবিতে শাবনাজের চরিত্রের নাম ছিল ময়না। এই ছবিতে কাজ করতে গিয়েই দুজনের মধ্যে প্রেম শুরু হয়। তাই শাবনাজকে এই নামে ডাকতে শুরু করেন নাঈম। শাবনাজের মতে, ‘এই ছবিতে আমাদের প্রেম শুরু হওয়ার পর থেকে নাঈম আমাকে ওই নামেই ডাকতেন। সে এখনো আমাকে সেই নামেই ডাকে।
শাবনাজ চলচ্চিত্রে অভিষেকের পর পরের পাঁচ বছর টানা ২৬টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ‘চাঁদনী’ ছাড়াও অন্যান্য ছবিগুলো হল ‘দিল’, ‘জিদ’, ‘আঞ্জুমান’, ‘লাভ’, ‘চোখে কেকেম’, ‘তকর অহংকার’, ‘ঘরে ঘরে লড়াই’, ‘সোনিয়া’, ‘অনুপতা’। এসব ছবিতে নাঈম ছাড়াও তার সহশিল্পী ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন, বাপ্পারাজ, সালমান শাহ, অমিত হাসান, মান্নারা।
শাবনাজের বেশির ভাগ ছবিই ছিল প্রেমের গল্প। মনে মনে শাবনাজ খুঁজছিলেন বৈচিত্র্যময় গল্প। কিন্তু শিল্পীর মনের কথা কেউ বুঝতে পারেনি। তাই আস্তে আস্তে নিজেকে সরিয়ে নিতে লাগলো।
শাবনাজ বলেন, ‘বোরিং গল্প। সব কিছুই ভালবাসার জন্য. আমি শুধু অভিনেত্রী হতে চাইনি, শিল্পী হতে চাই। তাই আমি একটি বৈচিত্র্যময় গল্প খুঁজছিলাম, কিন্তু আমি তা পেলাম না। একজন অভিনয়শিল্পী একটি অসাধারণ চরিত্র হিসেবে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকেন।
শাবনাজকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ২০০৭ সালে আজিজুর রহমানের ‘ডাক্তার বাড়ি’ ছবিতে। প্রবীণ অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের অনুরোধে তিনি ছবিতে অভিনয় করতে রাজি হন। তারপর থেকে পুরোপুরি আত্মগোপনে চলে যান। বর্তমানে স্বামী, সন্তান ও পরিবার নিয়ে সুখী অভিনেত্রী। অভিনয় জীবন নিয়ে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। ফেরার কথাও ভাবছেন না।