২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ও সহিংসতার ঘটনাগুলো এখন নতুন করে আলোচনায় এসেছে। ব্লগারদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ, নারী নীতির বিরোধিতা, এবং ১৩ দফা দাবির প্রেক্ষিতে হেফাজতে ইসলাম ওই কর্মসূচি আয়োজন করেছিল।
সেদিন রাতে মতিঝিলের শাপলা চত্বর ঘিরে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। পুলিশের নেতৃত্বে র্যাব ও বিজিবি সমন্বিতভাবে হেফাজত নেতাকর্মীদের উপর অভিযানে নামে। বিভিন্ন প্রতিবেদন এবং বিশিষ্টজনদের মতে, সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশেই এ অভিযান পরিচালিত হয়।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বরাবর পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, হেফাজতের কর্মসূচি দমনে পরিকল্পিতভাবে বৈদ্যুতিক ব্ল্যাকআউট করে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ, হত্যা, এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শতাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অভিযুক্ত হতে পারেন।
তদন্তে দেখা গেছে, শাপলা চত্বরের ওই অভিযানে পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা এবং গুমের মতো অপরাধ সংগঠিত হয়েছিল। অভিযুক্তদের মধ্যে ডিএমপির তৎকালীন কমিশনার বেনজির আহমেদসহ শতাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম উঠে এসেছে। ট্রাইব্যুনাল তাদের নাম, পরিচয় এবং দায়িত্ব সম্পর্কিত তথ্য জানতে চেয়েছে।
তৎকালীন দায়িত্বে থাকা ১০ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নামও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন মতিঝিল বিভাগের তৎকালীন এডিসি এস এম মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ট্রাফিক উপবিভাগের এডিসি মাঈনুল হাসান, রমনা বিভাগের এডিসি মঞ্জুর রহমান ও আনোয়ার হোসেন, ডিসি খান মোহাম্মদ রেজওয়ান, লালবাগ বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ হারুন-আর-রশীদ, ডিবি পশ্চিমের এডিসি মো. মশিউর রহমান, ডিবি দক্ষিণের কর্মকর্তা নাসিরুদ্দিন খান।
এছাড়া ডিএমপির সেই সময়ের অতিরিক্ত কমিশনার, যুগ্ম কমিশনার, ডিবির উপকমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট থানার কর্মকর্তাদের নাম এবং দায়িত্ব সম্পর্কিত তথ্যও চাওয়া হয়েছে।
এই তদন্তে শাপলা চত্বরের ঘটনার পেছনে জড়িত সকলের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।