গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) দুই গ্রুপের কর্মকর্তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুই নারী কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে এক পক্ষের কর্মকর্তারা। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ পক্ষ সুষ্ঠু বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।
অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে কর্মকর্তাদের একটি সংগঠন রয়েছে। সম্প্রতি একটি দল ‘পাস্ট ডাইরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন’ নামে আরেকটি সংগঠন করেছে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বুধবার সকালে উভয় পক্ষই শহীদ মিনারে ফুল দিতে যায়।
প্রথমে শ্রদ্ধা জানান পবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। পরে নতুন সংগঠনের নেতারা শহীদ মিনারের সামনে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান। আর পবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে বাধা দিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা ফুলের তোড়া ও সংগঠনের নাম নিয়ে যান। এ ছাড়া নতুন সংগঠনের দুই নারী সদস্যকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সময় উভয়পক্ষের কর্মকর্তারা হট্টগোল সৃষ্টি করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক হয়।
বিগত ডিরেক্ট রিক্রুটেড অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক জিএম সামসাদ ফখরুল ও সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ফুল দিয়ে শহীদ মিনারের সামনে যেতেই কর্মকর্তা পরিষদের নেতারা আমাদের বাধা দেন এবং তোড়া থেকে আমাদের সংগঠনের নাম ছিনিয়ে নেন। এরপর আমাদের দুই মহিলা অফিসারকে লাঞ্ছিত করে।এই ঘটনার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।বিচার না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছি।
পবিপ্রবি অফিসার্স কাউন্সিলের সভাপতি হারুনর রশিদ ডন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের একটিই সংগঠন, তা হলো পাবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। প্রায় একই নামে একটি দল আরেকটি সংগঠন তৈরি করে। যেহেতু তারা আমাদের সংগঠনের ভোটার, আমরা তাদের একই নাম ব্যবহার না করে ভিন্ন নামে একটি সংগঠন করতে বলেছি। আজ সকালে এইগুলিই আলোচনা করা হয়েছে, অন্য কিছু নয়। হাতাহাতি, ব্যানার ছিনতাই ও কর্মকর্তাদের অপমান করার অভিযোগ মিথ্যা।
পবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, “শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে কর্মকর্তাদের দুই সংগঠনের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। একই নামে দুটি সংগঠন থাকায় তাদের মধ্যে কিছুটা হাতাহাতি হয়েছে। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে ড. নিচে, উভয় পক্ষের শ্রদ্ধা নিবেদন.
এ বিষয়ে পবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বলেন, শহীদ মিনারে কর্মকর্তাদের দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ ব্যাপারে আমরা লিখিত অভিযোগও পেয়েছি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও মানব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. খালেদ ইকবাল চৌধুরী ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।