Tuesday , December 24 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ”শত কোটি টাকা লোপাট, নষ্ট করা হয় গুরুত্বপূর্ণ দলিল”

”শত কোটি টাকা লোপাট, নষ্ট করা হয় গুরুত্বপূর্ণ দলিল”

গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল মজিদ বলেন, গ্রামীণ টেলিকম ভবনের সাতটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে, গ্রামীণ ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা ছিনতাই হয়েছে। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত অর্ধশতাধিক গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ নথি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এ সময় গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পরিচালক নূর মোহাম্মদ, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ জুবায়েদ, আইন উপদেষ্টা মাসুদ আখতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনূস অভিযোগ করেন, ১২ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের চিড়িয়াখানা রোডে গ্রামীণ টেলিকম ভবনে থাকা ১৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আটটি জবরদখল করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানে গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো টাকা নেই। ব্যবসায়িক লাভে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি। ড. ইউনূসের সেই অভিযোগের জবাব দিতে আজ সংবাদ সম্মেলন ডাকে গ্রামীণ ব্যাংক।

সংবাদ সম্মেলনে একেএম সাইফুল মজিদ বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ৫১/৫২টি। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক সরকার এবং ঋণদাতা জনগণ। ডঃ ইউনূসের কোন প্রকার মালিকানা বা শেয়ার নেই।

তিনি বলেন, আইন মেনেই গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ উদ্যোগ, গ্রামীণ সামগ্রী, গ্রামীণ শক্তি- এ সাতটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফান্ড তিনটি কোম্পানি থেকে ড. ইউনূসের চেয়ারম্যান পদের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।

গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা লোকসান হয়েছে
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। গত বছর আমরা গ্রামীণ ব্যাংকের একটি বিস্তৃত অডিট করেছি যাতে সাত মাস সময় লেগেছিল। ১৯৮৩ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত, আমি ব্যাপক নিরীক্ষায় অনেক কাগজপত্র, নথি পেয়েছি। সেসব নথিতে আমরা দেখেছি গ্রামীণ ব্যাংকের স্বার্থ অনেক ক্ষুণ্ন হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকসহ গ্রামীণের ৫১ বা ৫২টা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ বোর্ডের অনুমোদনে হয়েছে।

অনেক গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানের টাকা মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক টাকা পাচার হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি, আমরা অনেক প্রমাণ সংগ্রহ করেছি। অনেক তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে বা হারিয়ে গেছে বা ধ্বংস হয়েছে। সম্পূর্ণ তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত কাউকে দোষারোপ করছি না।

তিনি বলেন, নব্বইয়ের দশকে অনেক গ্রামীণ প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯, সেই সময়ের মধ্যে আমি কোন রেকর্ড খুঁজে পাইনি। অনেক তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে অথবা নেই বা ধ্বংস করা হয়েছে। পূর্ণ তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত কাউকে দোষারোপ করছি না।

গ্রামীণ টেলিকম ভবনে কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়নি:
আইনি বৈধতার ভিত্তিতে গ্রামীণ টেলিকম ভবনে তিন কোম্পানির চেয়ারম্যানের মনোনয়ন দিয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। আইন অনুযায়ী ইউনূস ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নন। গ্রামীণ টেলিকম ভবনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার হয়নি। গ্রামীণ ব্যাংক ড. ইউনূসের আটটি প্রতিষ্ঠান দখল করেছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, সেটি সঠিক নয়।

তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৪২তম সভায় কোম্পানি আইনের আলোকে ১৯৯৬ সালে গ্রামীণ কল্যাণ গঠিত হয়। Articles of Association এর ৪৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে গ্রামীণ ব্যাংক গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিতে পারবে।

গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দাবি, গ্রামীণ কল্যাণ প্রতিষ্ঠাকালে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে নেন ৪৪৭ কোটি টাকা। গ্রামীণ টেলিকম প্রতিষ্ঠার সময় ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ২৪ কোটি টাকা অনুদান নেন। কিন্তু গ্রামীণ টেলিকম এখন পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংককে সুদ ও লভ্যাংশ বাবদ কোনো অর্থ প্রদান করেনি।

ড. ইউনূসের গ্রামীণ ৫১টি প্রতিষ্ঠানের কোনো মালিকানা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের কোনো শেয়ার নেই। এটি গ্রামীণ ব্যাংকের একটি সহযোগী সংস্থা গ্রামীণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

 

 

About bisso Jit

Check Also

ভারতের গণমাধ্যমে প্রতিবেদন ফাঁস, বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *