বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আ.লীগ সরকারকে উৎখাত করতে বিএনপি একের পর এক কর্মসূচী দিয়ে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই কর্মসূচিতে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি হামলা এবং প্রয়ানের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্মসূচী দেওয়া প্রসংগে বলেছেন, এই সরকারের যতদিন পতন হবে না, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে। তিনি অনেকটা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এমনকথা বলেন।
রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গুলশান চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গত ১৪ দিনে সারাদেশে দলের নেতা-কর্মীদের ওপর সরকারের দম’ন-পীড়’নের চিত্র তুলে ধরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার। এই সরকারকে পদত্যাগ করে সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এছাড়া নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে এবং নির্বাচন আয়োজন করতে হবে- এই লক্ষ্যেই আমরা এগুচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি চলবে। সারাদেশে আমাদের ১০ তারিখ পর্যন্ত কর্মসূচি রয়েছে। তারপর নতুন কর্মসূচী দেব। চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
বৃহত্তর মঞ্চ গঠন করে আন্দোলন বেগবান করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমাদের আলোচনা এখনো চলছে। আপনি জানেন, সবকিছুরই তার টিটবিট আছে। আমরা আশা করছি এটি চূড়ান্ত করে স্বল্প সময়ের মধ্যে জাতির সামনে তুলে ধরব।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সারাদেশে তিনজন নিহত ও দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মী আহ”ত হয়েছেন। গ্রেপ্তারের সংখ্যা দুই শতাধিক। সারাদেশে ৪ হাজার ৮১ জনের বেশি নাম ও অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার। সারা দেশে ২০ থেকে ২৫ টি জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া ৫০টি স্থানে বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হাম”লা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী ফ্যা’সিবাদী সরকারবিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হ’/’ত্যা ও গ্রেফতারের ব’/র্বর’তা বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি এবং সাধারণ মানুষ। যারা প্রয়াত হয়েছে তাদের নিরপেক্ষ তদন্ত, খু/”নি ও হা’মলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার অশুভ কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে জনগণের ঐক্যের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তা ধীরে ধীরে গণবি’স্ফো/’রণে পরিণত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো কথা নেই। আওয়ামী লীগের ছলচাতুরির অভাব নেই। তারা প্রতি মুহূর্তে কৌশল তৈরি করে এবং কৌশল তৈরি করে তারা আন্দোলনকে বিপথে চালিত করে, গণতন্ত্রকে ধ্বং”স করে… এগুলো তাদের সাধারণ বৈশিষ্ট্য।
মহাসচিব আরও বলেন, আমি সব সময়ই বলি, আওয়ামী লীগের বডি কেমেস্ট্রি একটা আছে। যে বডি কেমেস্ট্রিতে আছে সেটা হচ্ছে স’/’ন্ত্রাস। তাদের স’/’ন্ত্রাসের মধ্যে জন্ম, তারা স’/ন্ত্রা”স নিয়ে রাজনীতি করে এবং তারা স’/ন্ত্রা”স নিয়ে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার হাজার হাজার মানুষকে মাঠে নিয়ে যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, তাতে তারা (সরকার) ক্ষু”ব্ধ। যে কোন বিষয়ে প্রতিবাদ করি। তুমি আমাকে গু”/লি করবে। মানবাধিকার লঙ্ঘন কি হতে পারে?
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আজ শাওন হ’/’ত্যার মামলা করেছি। আমাদের দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। প্রতিটি খু’/’ন-জ’/খ”ম-খু’/’নের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। একদিকে আমরা রাজপথে প্রতিবাদ করছি। বেগবান করবো।
এ নিয়ে তিনি আরো যোগ করে বলেন, দেশের জনগণ ইতিমধ্যে রাজপথে নামতে শুরু করেছে এবং দিন দিন তারা আন্দোলনে সরব হচ্ছে। যার কারণে আ.লীগ এখন মাথা খারাপ হতে শুরু করেছে। তারা জনসমুদ্র দেখে ঘাবড়ে যাচ্ছে, ভীত হয়ে পড়ছে। যার কারণে তারা এখন হুমকি দেওয়া আরম্ভ করেছে। তবে তাদের হুমকিতে জনসমুদ্র কখনো থমকে যাবে না, এ সরকারের পতন ঘটিয়ে ছাড়বে।