লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম আসামি, ভারতীয় রাজনীতি ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে শঙ্কার কারণ হয়ে উঠেছিলেন। বাবরের কার্যকলাপ এবং কয়েকটি ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতীয় প্রশাসন তার ওপর বিশেষ নজর রাখছিল।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও ভারতের উদ্বেগ:
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ভয়াবহ ঘটনা। এই হামলায় অনেক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান এবং শেখ হাসিনা গুরুতরভাবে আহত হন। এই হামলার মূল পরিকল্পনার সঙ্গে লুৎফুজ্জামান বাবরের জড়িত থাকার অভিযোগ ভারতীয় গোয়েন্দাদের দৃষ্টিতে পড়েছিল। যেহেতু ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাই এই ঘটনার পর ভারত আরও সতর্ক হয়ে ওঠে।
চোরাচালান ও সীমান্তপথে অবৈধ কার্যকলাপ:
বাবরের সময় সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান, বিশেষ করে অস্ত্র এবং মাদক চোরাচালান বৃদ্ধি পেয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। সীমান্ত অঞ্চলে নিরাপত্তার অবনতি ভারতের জন্য এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। বাবরের এই অবৈধ কার্যকলাপের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে ধরা হয়।
জঙ্গি সংযোগের আশঙ্কা:
বাবরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অভিযোগ উঠেছিল। বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে বাবরের সম্পর্ক ছিল বলে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সন্দেহ করত। এই ধরনের জঙ্গি কার্যক্রম ভারতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় বাবরকে একটি বিপজ্জনক ব্যক্তি হিসেবে দেখা হত।
ভারতের রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ:
বাবর এবং তার সময়ে বিএনপির শাসনামলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েন দেখা দেয়। ভারতের আশঙ্কা ছিল, বাবরের কার্যকলাপ বাংলাদেশকে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশের দিকে ঠেলে দিতে পারে, যা ভারতের সীমান্ত অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি করবে। এছাড়াও, বাবরের জাতীয়তাবাদী অবস্থান ভারতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে তার বক্তব্য এবং কার্যকলাপে প্রতিফলিত হয়েছে।
এই কারণগুলোর ভিত্তিতে ভারত লুৎফুজ্জামান বাবরের ওপর নজরদারি বাড়িয়েছিল এবং তাকে নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে বিবেচনা করত।