উন্নত জীবনের আশায় প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ অবৈধভাবে ইউরোপের দেশ গুলোতে পারি দেয়। তবে অনেকের ভাঙ্গে নেমে আসে বড় রকমের বিপদ। কেউ আবার কষ্ট পেতে পেতে না ফেরার দেশে চলে যান। এমনকি দালালরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যবহার করে। এবার সংবাদ উঠে এলো লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার সময় বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেছেন। আর এখনো অনেম বাংলাদেশি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
লিবিয়া থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার সময় বাংলাদেশি যুবক হৃদয় কাজীর (২০) মৃ”’ত্যু হয়েছে। তিনি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার ঘোষালকান্দি গ্রামের মোশারফ কাজীর ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত রমজানের আগে মুকসুদপুর উপজেলার চরপ্রসন্নদী গ্রামের হাকিম দালালের মাধ্যমে চার লাখ ২০ হাজার টাকার চুক্তিতে লিবিয়ায় পৌঁছায় হৃদয়। সেখানে দালালরা তাকে আটকে রেখে অতিরিক্ত এক লাখ টাকা আদায় করে। সেখান থেকে ইলিয়াস দালালের মাধ্যমে আরো তিন লাখ ৫০ হাজার টাকার চুক্তিতে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা হয়। ইলিয়াসের বাড়িও মুকসুদপুর উপজেলার বড়দিয়া গ্রামে।
সেই চুক্তি অনুযায়ী ১৯ জুলাই প্লাস্টিকের বোর্টেং মোট ৬১ জনকে নিয়ে ইতালির উদ্যেশ্যে রওনা হয়। অনেক দেশের সীমান্তে পৌঁছানোর পরও নিরাপত্তরক্ষীদের কারণে কোন দেশেই তারা নামতে পারেনি। প্রচণ্ড রোদের মধ্যে সাগরে অনেক সময় ভাসতে থাকার কারণে হি”ট স্ট্রো”কে ১৭ জন বাংলাদেশিসহ মোট ৩০ জনের মৃ”’ত্যু ঘটে। বাকিরা অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পরে তুরস্কের কোস্টগার্ড এসে তাদের উদ্ধার করে। হৃদয়ের নিথর দেহ তুরস্কে আছে বলে জানিয়েছেন তার বন্ধু ও স্বজনরা।
একই বোর্টে থাকা হৃদয় কাজীর বন্ধু হৃদয় শেখ বলেন, ‘হৃদয় কাজী আমার কোলেই পানি পানি করতে করতে মা””রা গিয়েছে। আমিও অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন আছি। এছাড়াও একই উপজেলার ছাতিয়ানবাড়ী গ্রামের সাধন বিশাস, হোসেনপুর এলাকার জিন্নাত শেখ এবং শংকরদী গ্রামের সাগর সিকদারও চিকিৎসাধীন আছে।’
হৃদয় কাজীর কাকা মিরাজ কাজী জানান, আমার ভাতিজা ইতালি যাওয়ার পথে মা”’রা গেছে। এখন আমাদের একটাই দাবি ওর নিথর দেহটা যেন শেষবারের মত একবার দেখতে পারি।
উল্লেখ্য, দেশে কিছু অসাধু ব্যক্তি নানা রকম প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষদের অবৈধভাবে বিদেশে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। ওই সকল অসাধু দালালদের খপ্পরে পরে অনেক মানুষ তাদের মূল্যবান সম্পদ হারায়। এমনকি অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার পথে এভাবে অনেকে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। তাই অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার আগে অবশ্যই হাজার বার ভেবে দেখা উচিত।