বাংলাদেশে জঙ্গীদের হামলা বেশ কয়েকবার ঘটেছে এবং এই শক্তি মাথা চাড়া দেওয়ার চেষ্টা চালালেও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারনে সেটি আর পেরে উঠছে না। তবে এবার কয়েকজন জঙ্গী সদস্য গ্রেফতার হওয়ার পর চাঞ্চল্যকর তথ্য মিললো। এর মধ্য একজন হলেন ফখরুল ইসলাম যিনি আলোচিত আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের সাথে অনেকবার একত্র হয়েছেন এবং তার প্রশিক্ষন বাহিনীর কাছে তিনি প্রশিক্ষন নিয়েছেন।
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নিষিদ্ধ জ”ঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) সদস্য ফখরুল ইসলামের সঙ্গে আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের একাধিকবার সাক্ষাৎ হয়েছিল।
শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকা থেকে ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফখরুল ছাড়াও আরও পাঁচ হুজি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের কাছ থেকে নয়টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রে”ফতারকৃত অন্যরা হলেন সাইফুল ইসলাম (২৪), সুরুজ্জামান (৪৫), আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৩), দীন ইসলাম (২৫) এবং মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪৬)।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া অফিসে গ্রেফ”তারকৃতদের বিষয়ে সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গ্রেফ’তারকৃত ফখরুল পাকিস্তানে গিয়ে মুফতি জাকির নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে আল কায়েদার সদস্য হন। অ”স্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তিনি আফগানিস্তান ও ইরান থেকে পাকিস্তানের করাচিতে ফিরে আসেন। সম্প্রতি সেখান থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে ফিরেছেন তিনি। ফখরুল অত্যাধুনিক অ”স্ত্র ব্যবহারে পারদর্শী।
আসাদুজ্জামান আরও জানান, ফখরুল ১৯৮৮ সালে গাজীপুরের টঙ্গী থানাধীন তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় দারোয়ান হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে তিনি কাজের জন্য বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানের করাচিতে যান। পাকিস্তানে অবস্থানকালে তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুফতি জাকির হোসেনের সঙ্গে পরিচিত হন। মুফতি জাকির হুসেন পাকিস্তানের করাচিতে ইসলামিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং আল কায়েদার সাম”রিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মুফতি জাকির আল কায়েদার জি”/হাদি ট্রেনিং কমান্ডার।
জাকিরের জি”/হাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন ফখরুল ইসলাম। জি”/হাদি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য ফখরুল মুফতি জাকিরের সাথে পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানের কান্দাহারে দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণের জন্য বেশ কয়েকবার যান। সেখানে ফখরুল বিভিন্ন অ”স্ত্র প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আধুনিক আ”গ্নেয়া/’স্ত্র-ওকে ৪৭, এলএমজি ও রকেট ল”ঞ্চার চালানো শেখেন।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, প্রশিক্ষণের সময় ফখরুল কান্দাহারের সামশেদ হিলে নিয়মিত গু”/লি চালানোর অনুশীলন করতেন। মহড়ার সময় একে ৪৭ হাতে সজ্জিত হয়ে চার ঘণ্টা প্রশিক্ষণ এলাকা পাহারা দিতেন ফখরুল। এ সময় তিনি আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন ও মোল্লা ওমরের সঙ্গে বেশ কয়েকবার দেখা করেন। আফগানিস্তানে বিভিন্ন সময় জি”/হাদি প্রশিক্ষণের পর তিনি পাকিস্তানের করাচিতে ফিরে আসেন। করাচি থেকে তিনি ১৯৯৫ সালে ইরানের রাজধানী তেহরানে যান এবং সেখানে প্রায় তিন বছর থাকার পর তিনি করাচিতে ফিরে আসেন এবং ১৯৯৮ সালে ইসলামাবাদ থেকে ভারতীয় ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত হাফেজ আবদুল্লাহ আল মামুন সোশ্যাল মিডিয়ায় সুরক্ষিত এনক্রিপ্টেড অ্যাপের মাধ্যমে ‘মোরা সত্যের সৈনিক’-এর ‘‘অস্থায়ী মুসাফির’’ ছদ্মনাম ব্যবহার করে গ্রুপটি চালাত। আবদুল্লাহ আল মামুন এই অ্যাপসের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রবাসী ও অন্যান্য হুজি সদস্যদের সাথে উ”গ্রবা/’দী ও আক্র”/মণাত্মক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেন।
তিনি একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলেন যার মাধ্যমে তার প্রতিষ্ঠানের পরিচিত দুই ব্যক্তিকে হাতে কলম বো”/মা তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং বো”/মা তৈরির নির্দেশনা শেয়ার করা হয়। গ্রেফতা’রকৃতদের বিরুদ্ধে স’ন্ত্রা”/স বিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রসংগত, বাংলাদেশে কয়েক বছর ধরে সন্ত্রা”/সবাদ একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) এবং হরকাত-উল-জিহাদ-আল-ইসলামি (হুজি) এর মতো দলগুলো দেশে বেশ কয়েকটি হাম”/লার জন্য দায়ী। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রা”/সবাদের বিরুদ্ধে ল”ড়াই করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে চর”মপ’/ন্থী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গ্রেফতার ও দম”ন-পী”/ড়ন। যাইহোক, সন্ত্রা”/সবাদের হু”/মকি রয়ে গেছে এবং এটা বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের জন্য উদ্বেগজনক, যেটা দমনে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে সরকার।