বর্তমান সরকার ক্ষমতা আসার পর থেকে দেশের জনগনের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার দেশের বিভিন্ন সেক্টরে উন্নয়ন করেছে যার কারনে দেশের মানুষ আজ ভাল আছেন। দেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ও দেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বিদ্যুৎ সেক্টরে উৎপাদনে ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে তাই আজ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছেছে। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যুৎ সংকটের কারনে সরকার দাবি সঠিক নয় বলে প্রমান হয়েছে এমন বক্তব্য বিভিন্ন মহলের। এবারের বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি যে প্রস্তাব দিলেন।
বিদ্যুৎ খাতে ‘চুরি, দুর্নীতি, সিস্টেম লস ও সরকারের আত্মতুষ্টির খেসারত’ দেশবাসীকে দিতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে আটটি প্রস্তাবনা দিয়েছে দলটি।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এ মন্তব্য করেন।
দেশে ভয়াবহ বিদ্যুতের ঘাটতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে সাইফুল হক এক বিবৃতিতে বলেন, সারাদেশে তীব্র লোডশেডিংয়ে বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের বাড়াবাড়ি ও আত্মতুষ্টির মূল্য দিতে হচ্ছে দেশের জনগণকে। সরকারের ভুল নীতি, জ্বালানি খাতে চুরি, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও সিস্টেম লসের কারণে আজ বিদ্যুতের এই বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা গর্ব করছেন যে তারা ১০০ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করেছেন এবং লোডশেডিং জাদুঘরে পাঠিয়েছেন। ‘
“তিনি বলেন, ‘কেবল ইউক্রেনের যু/দ্ধ বা আন্তর্জাতিক বাজারের কথা বলে মারাত্মক বিদ্যুৎ ঘাটতির এই দায় এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। বিদ্যুৎ ঘাটতির এই পরিস্থিতি চলতে দিলে শিল্প উৎপাদন থেকে শুরু করে জরুরি সেবা খাতেও বড় সংকট দেখা দেবে।’
বিবৃতিতে সাইফুল হক বিদ্যুৎ খাতের সংকট উত্তরণে জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে ৮ দফা প্রস্তাব করেন।
১.বিদ্যুৎ খাতে ‘চুরি, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা এবং সিস্টেম লস’ কমাতে জরুরি ও পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
২. চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ দিতে না পারলে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দিয়ে বিশাল অঙ্কের অর্থ সাশ্রয় করা এবং সে অর্থ বিদ্যুৎ পেতে অন্যত্র ব্যয় করা।
৩. জরুরী ভিত্তিতে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ এবং এ খাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ নিশ্চিত করা। দেশের বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো দ্রুত সংস্কার করে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
৪. গ্যাস ও তেল উত্তোলনের জন্য জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং এ বিষয়ে জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
৫. রাশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে সাশ্রয়ী শক্তি পেতে কূটনৈতিক উদ্যোগসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। উচ্চ দামের স্পট মার্কেটকে কেবল শেষ ব্যবস্থা হিসেবেই কাজে লাগানো
৬. সরকারি-বেসরকারি অফিস, সুপারমার্কেট, পরিবহনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসির সীমিত ব্যবহারসহ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের আলোকসজ্জা বন্ধ করা।
৭. শিল্প উৎপাদন ও হাসপাতালসহ জরুরি সেবাগুলোকে লোডশেডিংয়ের বাইরে রাখতে হবে।
৮. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় তাৎক্ষণিক, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে অবিলম্বে একটি জাতীয় কমিশন গঠন করা।
বিবৃতিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আশা প্রকাশ করেন, সরকার দলের প্রস্তাবগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সংকট উত্তরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
প্রসঙ্গত, বিদ্যুৎ সংকট তৈরী হওয়ায় জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে সমাধানের আটটি প্রস্তাব দেওয়া হয়।