যুক্তরাজ্যের লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের আরও একটি উপহারের ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে। উত্তর লন্ডনের ওই ফ্ল্যাটটি তার পরিবারকে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক সহযোগী।
ফিনান্সিয়াল টাইমস, সানডে টাইমস এবং দ্য টেলিগ্রাফসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক তার খালা এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক ঘনিষ্ঠজন কর্তৃক তার পরিবারকে উপহার দেওয়া দ্বিতীয় একটি বাড়িতে বসবাস করতেন। টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লেবার মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করছেন, যার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের দুর্নীতি মোকাবেলা করা।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আর্থিক অপরাধ ও দুর্নীতি মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেডে একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। তার বোন আজমিনা ওই ফ্ল্যাটটি তাকে ব্যবহারের জন্য দিয়েছিলেন।
আরেকটি প্রতিবেদনে সানডে টাইমস জানায়, ২০০৯ সালে বাংলাদেশি আইনজীবী মঈন গণি ওই ফ্ল্যাটটি টিউলিপের বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে হস্তান্তর করেন এবং পরে আজমিনা বিনামূল্যে টিউলিপকে সেটি ব্যবহারের অনুমতি দেন।
ফিনান্সিয়াল টাইমসের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০৪ সালে টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার একটি দুই বেডরুমের অ্যাপার্টমেন্ট পেয়েছিলেন, যেখানে তিনি কোনো অর্থপ্রদান ছাড়াই বাস করতেন। ওই ফ্ল্যাটটি আবদুল মোতালিফ নামে এক ডেভেলপার তাকে উপহার দিয়েছিলেন। মোতালিফ শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।
এ বিষয়ে আরও বলা হয়েছে, ২০০১ সালে আবদুল মোতালিফ ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড দিয়ে ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন। পরবর্তীতে সেটি টিউলিপকে উপহার দেওয়া হয়। ল্যান্ড রেজিস্ট্রি নথি অনুযায়ী, টিউলিপ বা তার বোন আজমিনাকে ওই ফ্ল্যাটের জন্য কোনো অর্থ পরিশোধ করতে হয়নি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এখনও টিউলিপ সিদ্দিকের ওপর আস্থা রেখেছেন।
এছাড়া, ২০১২ সালে টিউলিপ সিদ্দিক হ্যাম্পস্টেড ফ্ল্যাটটিকে তার বাসভবন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অফিসিয়াল নথিতেও এই ঠিকানাটি ব্যবহার করেছেন।
এদিকে, গত মাসে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন টিউলিপ সিদ্দিকের পরিবারের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে, এবং ওই মাসেই যুক্তরাজ্যে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।