সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের একজন আবু সোলেমান মো. সোহেল (৩৫)। কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী ইউনিয়নের বনশুয়া গ্রামের এক সাধারণ পরিবারে বেড়ে ওঠেন তিনি। নিজেকে ব্যবসায়ী পরিচয় দেওয়া এই ব্যক্তি প্রশ্নফাঁস চক্রে জড়িয়ে অল্প সময়ের মধ্যে আঙুল ফুলে কলাগাছ পরিণত হয়েছেন। হঠাৎ করে প্রচুর সম্পদের মালিক হয়ে ওঠার রহস্য তার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে, আমেরিকার একটি লটারিতে তার ভাগ্য খুলে যায়। এমনকি সোহেলের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা সামনে আসার পর তিনি স্থানীয়দের ঘটনাটি এমনভাবে বিশ্বাস করতে পেরেছিলেন যে তারা অবাক হয়েছিলেন!
তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সোহেল সবার ছোট। সোহেলের গ্রামের সবাই জানেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে স্নাতক শেষ করেছেন তিনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পড়াশোনা নিয়ে সংশয় রয়েছে সহপাঠীদের মধ্যে। তাদের দাবি, ছাত্র হিসেবে সোহেল খুব একটা ভালো ছিল না। তার সার্টিফিকেটও খতিয়ে দেখা দরকার। এটি জালও হতে পারে।
সোহেলের গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন লোকের কাছে জিজ্ঞাসা করা হয় তার ব্যাপারে। তাদের প্রায় সবার মুখেই এক গল্প, শুনেছি সোহেল আমেরিকান লটারি জিতে কোটিপতি হয়েছেন। সেই টাকা দিয়ে তিনি মিরপুরে ব্যবসা করেন।
গ্রামের কয়েকজনের কাছ থেকে জানা যায়, সোহেল মাঝেমধ্যে ঢাকা থেকে বাড়িতে এলেও কারও সঙ্গে মিশত না। তার বড় ভাই সুজনের কুমিল্লা শহরের ছাতিপট্টিতে একটি স্বর্ণের দোকান রয়েছে। মেজোর ভাই খালেদ হোসেনেরও বুড়িচং সদরে সোনার দোকান রয়েছে। দুটি দোকানেই সোহেলের বিনিয়োগ রয়েছে। কয়েকদিন আগে বাড়ির পাশে দেড় কোটি টাকা মূল্যের ৬০ শতক জমিও কিনেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পিএসসির দুই উপ-পরিচালক, দুই সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। গত রোববার ও সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।