গত ২৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী একটি লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নী ঘটনা ঘটেছে। এতে অসংখ্য মানুষ প্রান হারিয়েছে। এবং অনেকেই গুরুত্ব অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে সেই রাতে মানবিকতার পরিচয় দিলেন মিলন খান। বিনা ভাড়ায় সেই রাতে প্রায় ৩০০ শত যাত্রীকে পারাপার করেছেন তিনি। এমন কর্মকান্ডে সর্বত্র প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
ঝালকাঠিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে লঞ্চে আগুন দেখে প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া শ তিনেক যাত্রীকে উদ্ধারে কাজ করেছেন মিলন খান (৩৫) নামের এক ট্রলারচালক। তিনি বিপদগ্রস্ত যাত্রীদের তীরে পৌঁছে দিয়েছেন। কাউকে কাউকে তিনি হাসপাতালের পথ পর্যন্ত এগিয়ে দিয়েছেন। যাত্রী বহনের পুরো কাজটি তিনি করেছেন বিনা ভাড়ায়। মিলন লঞ্চঘাট বেড়িবাঁধ এলাকার মৃ/ত সরুব আলীর ছেলে। স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে পাঁচজনের সংসার তাঁর। ট্রলার চালিয়েই সংসার চালান তিনি। প্রতিদিন তিনি ১০ টাকার বিনিময়ে সদরের দিয়াকুল থেকে শহরের লঞ্চঘাটে যাত্রী পারাপার করেন। তবে লঞ্চে অ/গ্নি/কা/ণ্ডের ঘটনার দিন তিনি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নেননি। ঘটনার দিন রাত তিনটা থেকে পরদিন শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত আ/হ/ত যাত্রীদের পারাপারের কাজ করেছেন তিনি।
ট্রলারচালক মিলন খান বলেন, ‘রাত তিনটার দিকে দিয়াকুল গ্রামের সুগন্ধা নদীতে যাত্রীদের চিৎকার ও আ/গু/ন দেখে ট্রলার নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি আ/গু/ন থেকে বাঁচতে যাত্রীরা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ভেসে আছেন। পরে তাঁদের উদ্ধার করে পাড়ে নিয়ে যাই। এলাকার লোকজন তাঁদের আশ্রয় দেন। গরম পোশাকের ব্যবস্থা করেন। তাঁদের অনেকেই দগ্ধ ছিলেন। হাত-পা ভাঙা ছিল। দ্রুত তাঁদের হাসপাতালে পাঠিয়ে চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন ছিল। দিয়াকুল গ্রামের মানুষের সহায়তায় রাত থেকে সকাল পর্যন্ত অন্তত ৩০০ যাত্রী পারাপার করে তীরে ও হাসপাতালে পাঠাতে সহায়তা করেছি। আমি কারও কাছ থেকে কোনো ভাড়া নিইনি। টাকাই সব নয়। বিপদে মানুষকে সহায়তা করেছি, এটাও কম নয়।’ পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও দিয়াকুল গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহীন আকন ঘটনার সময় আ/হ/ত যাত্রীদের জন্য স্থানীয় একটি দোকান থেকে খাবারের ব্যবস্থা করেন। যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য ট্রলারের ব্যবস্থাও করেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েছি। তবে হ/তা/হতের সংখ্যা কম হলে মনটা ভালো লাগত।’
এখন পর্যন্ত সর্বশেষ পাওয়া তথ্য মতে লঞ্চের ভয়াবহ অগ্নী ঘটনায় ৩৮ জন নি/হ/ত হয়েছেন। এবং নিখোঁজ আছেন ৫১ জন। এছাড়াও গুরুত্বর হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন অনেকে। ইতিমধ্যে এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে প্রশাসন। এবং অনিয়মকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। অবশ্যে লঞ্চের মালিক সহ বেশ কয়েকজনের নামে মামলা হয়েছে।