বর্তমানে বিএনপি এবং ক্ষমতাসীন দল আ.লীগ একে অপরের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ করে চলেছে। বিএনপি নেতারা পদ্মা সেতু স্থাপনের শুরু থেকে এই সেতুর বাস্তবায়ন হওয়া পর্যন্ত নানা ধরনের সমালোচনা করেন। পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন করতে এই সরকার পারবে না এমন মন্তব্যও অনেক বিএনপি নেতা করেন। তাছাড়া সেতুর অর্থায়নের বিষয়টি বানচাল করার জন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে বিএনপি পন্থী কয়েকজন ব্যক্তি। তাছাড়া কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি এই ষড়যন্ত্রের মূলে ছিলেন এমনটি দাবি করে আ.লীগ নেতারা।
এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, লজ্জা-শরম না থাকায় ফরিদপুরের সমাবেশ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চুপিসারে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে এসেছেন। তার লজ্জা-শরম থাকলে এমন কাজ করতে পারতেন না। পদ্মা সেতু নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালানোর জন্য জাতির কাছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা চেয়ে পদ্মা সেতুতে ওঠা প্রয়োজন ছিল।
সোমবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ফরিদপুরের জনসভা শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় ফেরার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের কোনো লজ্জা নেই। পদ্মা সেতুতে ওঠার আগে তাদের বলা উচিত ছিল- পদ্মা সেতু নিয়ে আমরা যে মিথ্যা অপপ্রচার করেছি তার জন্য জাতির কাছে, জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। ক্ষমা চেয়ে পদ্মা সেতুতে ওঠা প্রয়োজন ছিল। লজ্জা-শরম নাই সে জন্য চুপিসারে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে এসেছে।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি প্রায় ১৪ বছর ধরে বলে আসছে সরকার পতন করবে, পতন না হলে দেশে ফিরবে না। অবশ্য প্রতিটি সমাবেশের পর তারা বাড়ি ফিরে যায়। তারা যতটা দাবি করছে, তাতে আমাদের একটা সুবিধা হচ্ছে, আমাদের কর্মীরা আরও শক্তিশালী হচ্ছে। আওয়ামী লীগের কর্মীদের একটি গুণ হলো কেউ খোঁচা দিলে, তারা ঐক্যবদ্ধ ও উজ্জীবিত হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির এই আন্দোলনে আমাদের কর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছে। তারই বহিঃপ্রকাশ দেখেছেন, যুবলীগের সমাবেশে লাখো তরুণের সমাগম হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে হাওয়া ভবন নির্মাণ করে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদাবাজি করেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মির্জা ফখরুল সাহেব কিছুদিন আগে বলেছিলেন, সরকার পতন হলে তারেক জিয়ার নেতৃত্বে একটি জাতীয় সরকার হবে। অর্থাৎ হাওয়া ভবনের বিশ্ব চোর আবার বাংলাদেশে আসবেন এবং তারা তার নেতৃত্বে জাতীয় সরকার গঠন করতে চায়। দেশের মানুষ এটা কখনো মেনে নেবে না।
বিএনপির সমাবেশের আগে লঞ্চ, বাস, ট্রাক ধর্মঘট ডাকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি যেহেতু লঞ্চ, বাস, ট্রাকে সবকিছু পু’ড়িয়ে দিয়েছে। বিএনপি সমাবেশ করলে লঞ্চ, বাস, ট্রাকের মালিকরা আত’/ঙ্কে ধর্মঘট করে। কারণ অতীতে তারা সমাবেশের নামে, আন্দোলনের নামে বাস-ট্রাক পুড়িয়েছে। বাস-ট্রাকে থাক মানুষদেরকে পুড়িয়েছে, যাদের নিয়ে আমাদের কর্মসূচি ছিল। সেখানকার মানুষের আহাজারি, কান্না, সেই কান্নার জন্য বিএনপি দায়ী। তারা সবাই বিএনপির বিচার দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য বর্তমান সময়ে এসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনেকটাি পাল্টে গেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক আ.লীগ এবং বিএনপি একে অপরের বিষোদগার করে চলেছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলো নানা দোষ ত্রুটি তুলে ধরছে জনগনের আস্থা অর্জন করার জন্য।