বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রতিবেশী দুই দেশ। তবে এই দুই দেশের মধ্যে ১৯৭১ সালের পর থেকে এখনো সুসম্পর্ক গড়ে উঠেনি। তবে বর্তমান পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনে আপ্রান চেষ্টা করছেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ দেশও পাকিস্তানের দেওয়া প্রস্তাবে সম্মত জানিয়েছে। সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে বেশ কিছু কথা বলেলেন পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি।
বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের বরফ গলছে বলে দাবি করে পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের কিছু ‘ফ্যাক্টর’ আছে, যেগুলো বলতে চাই না।” সোমবার ইসলামাবাদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মেহমুদ কুরেশি গত বছর তাঁর সরকারের কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। সেখানে অন্য বিষয়গুলোর মধ্যে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আসে। মেহমুদ কুরেশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কথা বলেছেন। শেখ হাসিনাকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। ইমরান খানেরও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ নিয়ে কথা হয়েছে। তাই বলা চলে, বরফ গলছে। গত বছরের মার্চ ও ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপের শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি পাকিস্তানকে। তবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছিলেন। সেটি ২৬ মার্চ ঢাকায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারের অনুষ্ঠানে প্রচার করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ে কোনো দ্বিপক্ষীয় সফর হয়নি। এমনকি পাকিস্তানে বহুপক্ষীয় বিভিন্ন ফোরামের বৈঠক বা সম্মেলনেও বাংলাদেশ থেকে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা যাননি।
গত বছর দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ে সফর বিনিময়ের প্রস্তাবের কথা পাকিস্তানের দিক থেকে বিভিন্ন সময় বলা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সেগুলো এখনো মৌখিকভাবে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে। ভারতের জেদে সার্ক অচল, অভিযোগ পাকিস্তানের : দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাকে (সার্ক) কার্যত অচল করে দেওয়ার জন্য ভারতের জেদকে দায়ী করেছে পাকিস্তান। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এর জন্য ভারতকে দায়ী করেন। তবে তিনি পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতসহ সদস্য অন্য দেশগুলোর প্রতি আমন্ত্রণ পুনর্ব্যক্ত করেন। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত যেন সার্কের অন্য সদস্য দেশগুলোকে পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে যোগ দিতে বাধা না দেয়। ভারত যদি পাকিস্তানে গিয়ে সম্মেলনে সরাসরি অংশ নিতে না চায়, তাহলে ভার্চুয়ালিও যোগ দিতে পারে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত যদি ইসলামাবাদে সম্মেলনে যোগ দিতে না পারে, তবে অন্তত তার অন্য দেশগুলোকে সম্মেলনে যোগ দেওয়া ঠেকানো উচিত নয়।’ তিনি অভিযোগ করেন, ভারতের অনীহার কারণে সার্ক প্রকৃত সম্ভাবনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত দেশ গুলোর সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এমনকি ইতিমধ্যে উন্নয়নের দিক দিয়ে প্রতিবেশী অনেক দেশকেই পিছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। এই পিছনের তালিকায় পাকিস্তানও রয়েছে। এদিকে বাংলাদেশের উন্নয়নের আগ্রগতি দেখে বাংলাদেশের সঙ্গে এক সাথে উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান।