মার্কিন যুক্তরাষ্টের স্টেট ডিপার্টমেন্ট সারা বিশ্বের মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে যায় সব সময়। আর মানবাধিকার রক্ষা সবার সমান রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য তারা বিভিন্ন দেশের উপর নজরদারি করে থাকে। বাংলাদেশও এ থেকে বাদ যায় না। আর এই কারনে প্রায়শই বাংলাদেশ নিয়ে নানা ধরনের বার্তা দিয়ে থাকে এই প্রতিষ্ঠানটি। এবার নতুন করে দেয়া একটি বার্তা প্রকাশ করেছে মুশফিকুল ফজল আনসারী। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই লেখনী তুলে ধরা হলো হুবহু:-
বন্ধ হতে হবে হয়রানি, যেতে হবে জেনুইন নির্বাচনের পথে বাংলাদেশে অবাধ, স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ এবং জেনুইন নির্বাচনের পক্ষে অনড় যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচন প্রশ্নে শেখ হাসিনার কথা ও কাজে মিল দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার ওয়াশিংটনের ফরেন প্রেস সেন্টারে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির আপডেট সংক্রান্ত এক বিশেষ ব্রিফিংএ দেশটির পক্ষে এমন অভিমত তুলে ধরেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস।
ব্রিফিংএ অংশ নিয়ে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান- যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ নির্বাচন অনুষ্ঠানের নিয়ে তাগাদা দিয়ে আসছে। আপনি গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে সমুন্নত রাখার কথা বলছেন বারবার। অথচ দেশটির চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। যুক্তরাষ্ট্রের শক্ত অবস্থানের পরও আমরা ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে দুটি প্রহসনের নির্বাচন প্রতক্ষ করেছি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এখন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন; বলছেন এখানে সঠিক নির্বাচন হয়না, বাংলাদেশের চেয়ে বেশি মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের উপস্থিতিতে একটি উন্মুক্ত সভায় যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থার ত্রুটি সমুহ তুলে ধরে জ্ঞান বিতরণ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী। এমন বাস্তবতায় নিরপেক্ষ তত্তাবধায়ক সরকার গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কী হবে?
জবাবে প্রেসিডেন্ট ওবামার বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পালন করা বর্তমান স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি বলেছেন যে, তিনি ও তার সরকার বাংলাদেশের আগামী সংসদীয় নির্বাচন অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ চান। আমরা এই চাওয়াকে স্বাগত জানিয়ে বলবো, গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তার এই কথা এবং কাজের মধ্যে শেষ পর্যন্ত মিল থাকছে কী না। তার আগে ধারণা নিতে চাই সরকার কী ভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করবে, যেমনটি একটি নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য।
একটি জেনুইন সর্বপরি অবাধ, স্বচ্ছ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকার কী ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছে তা দেখতে চাই।
নেড প্রাইস বলেন, যদিও নির্বাচনের দিন এখনো বাকী কিন্তু দেখতে চাই বাংলাদেশ একটি জেনুইন নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কেবল একটি জেনুইন ( খাঁটি) স্বচ্ছ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজনের লক্ষ্যে গঠনমূলক উদ্যোগে আমরা সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসবো।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআই’র প্রাক্তন কর্মকর্তা, মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, আমরা বিরোধী রাজনৈতিক নেতা এবং মুক্তমত প্রকাশকারীদের উপর সহিংসতা হয়রানি এবং ভীতি প্রদর্শনের বিষয়গুলো লক্ষ্য করছি এবং সরকারের কাছে আমাদের উদ্বেগ তুলে ধরেছি। এবং আমাদের এই ধারা অব্যাত থাকবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ভূয়সী প্রশংসা করে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, বাংলাদেশে আমাদের রাষ্ট্রদূত অসাধারণ কাজ করছেন। তিনি কেবল যুক্তরাষ্ট্রকেই প্রতিনিধিত্ব করছেনা বরং আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে নিরলস ভূমিকা রাখছেন এবং তার এই ভূমিকা অব্যাহত থাকবে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও বাংলাদেশ নিয়ে এবং বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর কাছে অনেক কথা জানিয়েছেন সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। আর সেই অনুযায়ী বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছেন বা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বার্তা দিয়েছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর বেশ কয়েক জন মুখপাত্র।