বাংলাদেশের রেলওয়ের ব্যবস্থাপনার অনিয়মের কথা শোনা যায় প্রায়। আর তা নিয়ে বিভিন্ন সময় হয়রানির শিকার মানুষেরা করে প্রতিবাদ। প্রতিবাদে তেমন কোনো পরিবর্তন হয় না। কিছু দুষ্টপ্রকৃতির মানুষেরা নিজেদের স্বার্থে সাধারণ মানুষদের করে হয়রানি। সম্প্রতি রেলের অনিয়মের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহি উদ্দিন রনি করে লাগাতার আন্দোলন আর সেই আন্দোলনে নড়েচড়ে বসে রেল কর্তৃপক্ষ। সেই রনিকে রেলওয়ের অংশীজন কমিটিতে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন রেলসচিব।
রেলওয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে আন্দোলনে নামা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনিকে রেলওয়ে স্টেকহোল্ডার কমিটিতে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবির।
তিনি বলেন, ‘রনিকে রেলওয়ে কমিটিতে রাখা হবে। যাতে তিনি তার পরামর্শ ফোরামে বলতে পারেন। ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করা হবে। যে সহজ কর্মকর্তার সঙ্গে রনির অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে তাকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ জুলাই) রেলওয়ে ভবনে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মহিউদ্দিন রনি। ওই বৈঠকে রেল সচিব এসব কথা বলেন।
রেলওয়েও রনির দাবির সঙ্গে একমত, রেল সচিব বলেন, রেলের টিকিট ব্যবস্থা উন্নত করা হচ্ছে। রেলওয়েও রনির দাবির সঙ্গে সায় দিয়েছে। ব্যবস্থার উন্নয়নের নির্দেশনা দিয়ে সহজজাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ই-টিকিটিং ব্যবস্থা উন্নত করার কাজ চলছে।
এদিকে বৈঠকে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রনির ৭ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। মহিউদ্দিন রনি আপাতত আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে চার ঘণ্টা বৈঠক করেন রনি। তিনি বেরিয়ে এসে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
বৈঠক শেষে মহিউদ্দিন রনি বলেন, “আমি বৈঠকে রেলওয়ের সব অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কথা তুলেছি। তারা বলেছে আমার দাবিগুলো বাস্তবায়ন করবে। আমার আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে যাতে কোনো তৃতীয় পক্ষ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য আমি আছি। আপাতত আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করছি।’
রেলওয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনাসহ ৬ দফা দাবিতে ৬ জুলাই থেকে কমলাপুর স্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন রনি। টানা ১৯ দিন আন্দোলনের পর রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান তিনি। বৈঠকে রেলের কর্মকর্তারা তাকে আশ্বস্ত করে আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেন।
মহিউদ্দিন রনির ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে অবিলম্বে টিকিট ক্রয়ে সহজ ডটকমের যাত্রী হয়রানি বন্ধ, টিকিট কালোবাজারি রোধ, অনলাইন ও অফলাইনে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।
এ ছাড়া যাত্রী চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো, ট্রেনের টিকিট ইন্সপেক্টর ও সুপারভাইজারদের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিং, খাবার বিক্রিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ট্রেনে ন্যায্য মূল্যে, বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
প্রসঙ্গত, ট্রেন হলো খুব নিরাপদ ভ্রমণের জন্য আরামদায়ক একটি বাহন। দেশের এক প্রান্ত থেকে ওান্য প্রান্তে অল্প সময়ের মধ্যে যাতায়াত করা যায়। প্রত্যেকদিন হাজার হাজার মানুষ ট্রেনে করে তাদের গন্তব্যস্থলে যাওয়া আসা করে থাকে।