Wednesday , December 25 2024
Breaking News
Home / Countrywide / রেমিট্যান্স ও আমদানির ডলারের দাম নিয়ে পাওয়া গেল নতুন তথ্য, চিন্তিত বিশ্লেষকেরা

রেমিট্যান্স ও আমদানির ডলারের দাম নিয়ে পাওয়া গেল নতুন তথ্য, চিন্তিত বিশ্লেষকেরা

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বেশি দামে রেমিটেন্স ডলার কেনার কারণে আমদানিতেও দাম বাড়ছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে। ফলে আমদানি ব্যয় আরও বাড়বে।

ব্যাংকগুলো এখন রেমিটেন্স ডলার কিনছে ১১২ থেকে ১১৪ টাকায়। কিছু ব্যাংক এর চেয়েও বেশি হারে কিনছে। চড়া দামে কেনা ডলারও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) আবারও ডলারের মূল্য বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার জন্য আবারও চাপ দিচ্ছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেডা) গত মাসের শেষ দিকে ডলারের সর্বশেষ দর নির্ধারণ করে। এতে রেমিট্যান্সের ডলার সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ও আমদানিতে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ৫০ পয়সা করে বিক্রির নির্দেশনা দেয় ব্যাংকগুলোকে। প্রতি ডলারের ক্রয় ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যকার সর্বোচ্চ ব্যবধান থাকতে হবে ১ টাকা।

কিন্তু কিছু ছোট ও দুর্বল ব্যাংক এখনও বাফেদার নির্দেশনা ভঙ্গ করে রেমিটেন্স ডলার কিনেছে ১১২ থেকে ১১৪ টাকায়। তারা ওই ডলার আমদানিতে বিক্রি করছিল সর্বোচ্চ ১১৭ থেকে ১১৮ টাকায়। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, কোনো কোনো ব্যাংক আমদানি করা ডলার ১২২ টাকায় বিক্রি করেছে।

এই স্ফীত মূল্যে ডলার বিক্রির কোনো যৌক্তিকতা ছিল না। তাই চড়া দামে ডলার বিক্রির অভিযোগে ১০টি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারা জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন করেছে।

এদিকে, গত মাসে রেমিট্যান্স কমে ১৩৪ মিলিয়ন ডলার এবং রপ্তানি আয় কমে ৪৩১ মিলিয়ন ডলারে নেমেছে, বাজারে ডলার সংকট আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় রেমিটেন্স সংগ্রহ করতে ডলারের দাম বাড়ায় ব্যাংকগুলো। তারা এখন রেমিটেন্স ডলার কিনছে ১১৪ থেকে ১১৬ টাকায়।

কোনো কোনো ব্যাংক বেশি হারে বৈদেশিক মুদ্রা সংস্থা থেকে রেমিট্যান্স কিনছে। রেমিট্যান্স সংগ্রহকারী এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো রেমিটেন্স ডলার ব্যাংকে হস্তান্তর করছে যেখানে ডলারের দাম বাড়ছে। যার কারণে এখন সব ব্যাংকই বেশি দামে রেমিটেন্স কিনছে। রেমিটেন্সের দাম বেশি হওয়ায় ব্যাংকগুলোর ডলার কেনার খরচ বাড়ছে।

ফলে আমদানির জন্য ডলার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে গড় ক্রয় মূল্য ও গড় বিক্রয় মূল্যের মধ্যকার ব্যবধান সর্বোচ্চ ১ টাকা করা যাবে। এ বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদারকি করছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, রেমিটেন্স ডলার কেনার ক্ষেত্রে তারা হস্তক্ষেপ করবে না। তবে আমদানির জন্য নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ডলার বিক্রি করা যাবে না।

এদিকে, ডলারের দাম বাড়লেও আগের দামেই ডলার কিনছে বলে বাফেডা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানিয়েছে কয়েকটি ব্যাংক। এতে একদিকে ডলারের দামে বুফে রেট কার্যকর হচ্ছে না। অন্যদিকে বাজারে ডলারের দরপতনে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।

এর আগে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইএমএফের পরামর্শে বাফেটের মাধ্যমে একক ডলারের মূল্য বাস্তবায়নের দিকে অনেকদূর এগিয়েছিল। কিন্তু ডলার সংকটে এর প্রতিফলন আর দেখা যাচ্ছে না।

এদিকে ডলারের দাম বাড়ায় আমদানি ব্যয় বাড়ছে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা। আগে আমদানি করা ডলার কেনা হতো ১১০ টাকা ৫০ পয়সায়। ফি ও অন্যান্য খরচসহ প্রতি ডলার ছিল ১১১ টাকা।

এখন অনেক ব্যাংক আমদানির জন্য ১১৩ থেকে ১১৪ টাকা চার্জ করছে। কিছু ব্যাংক বেশি চার্জ করেছে। এতে আমদানি ব্যয় বাড়বে এবং পণ্যের দাম আরও বাড়বে।

ব্যাংকাররা জানান, হুন্ডিতে রেমিট্যান্স আসছে ব্যাংকের চেয়ে আট থেকে ৯ টাকা বেশি করে। ব্যাংকগুলো বেশি দামে রেমিটেন্স কিনলে হুন্ডির প্রবণতা কমে যাবে। এখন হুন্ডির প্রবনতা কমাতে ব্যাংকগুলোকে খোলা বাজারের ডলারের সঙ্গে পাল্লা দিতে হচ্ছে। তা না হলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না।

এদিকে ডলারের দাম কেন বাজারভিত্তিক হচ্ছে না তা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ওপর বেশ চাপ সৃষ্টি করেছে ঢাকা সফররত আইএমএফ মিশন। তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এ খাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে ডলারের দাম পুরোপুরি বাজারে ছেড়ে দিতে বলে।

এদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, ডলারের দাম পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে তা আরও উচ্চ পর্যায়ে গিয়ে মূল্যস্ফীতির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। যা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দেবে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাও ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বে। এ কারণে ধীরে ধীরে ডলারের দাম বাড়ার পক্ষে তারা।

এদিকে খোলা বাজারে ডলার এখন বিক্রি হচ্ছে ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে। কিছু কিছু এলাকায় ডলার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

 

 

About bisso Jit

Check Also

জরুরী ঘোষণা: কর্মকর্তা- কর্মচারীদের সব ছুটি বাতিল

২০২৫ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে জানুয়ারির মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *