বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা যে বক্তব্য দিয়েছেন তার বিরোধিতা করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, রুশ মুখপাত্রের মন্তব্য বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার পরিপন্থী। এ ধরনের অপব্যাখ্যার সঙ্গে বিএনপি একমত নয়। এ ব্যাপারে রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করছে দলটি।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপির পক্ষে গণমাধ্যমে এক বিবৃতি দেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বলা হয়, গত ২২ নভেম্বর রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা তার এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্টে যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেন এবং বাংলাদেশের মানুষ ও বিএনপি তা দেখেছে। তিনি (মারিয়া জাখারোভা) বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিরুদ্ধে সাধারণ পরিষদের আয়োজনে বিরোধীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তোলেন। গত ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে এ খবর প্রকাশিত হয়। ঢাকায় রাশিয়ান দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও জাখারোভার বক্তব্য পোস্ট করা হয়।
বিএনপি আরও বলেছে, রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্য একটি স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও অবস্থানের পরিপন্থী। বিএনপি এই ভুল তথ্য ও ভুল ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত নয়।
মারিয়া জাখারোভার মন্তব্যের বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিএনপির সমাবেশ আয়োজনে কোনো বিদেশি কূটনীতিক সহায়তা করেছেন, এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত অভিযোগ এর আগে উত্থাপিত হয়নি। এ ধরণের বাস্তবতা বিবর্জিত বক্তব্য বাংলাদেশের জনগণের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষার বিরোধী বলে প্রতীয়মান। কার্যত, জাখারোভার দৃষ্টিভঙ্গি জনগণের স্পৃহাকে অবমূল্যায়নের মাধ্যমে, দুর্নীতিগ্রস্ত আওয়ামী সরকারের শাসন ব্যবস্থাকেই সমর্থন করে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বক্তব্য বাংলাদেশিদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে বলে উল্লেখ করে বিএনপি।
দলটি বলছে, পারস্পরিক বাণিজ্য ও অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক স্বার্থে বাংলাদেশ-রাশিয়া দীর্ঘদিনের বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়ার অবদান আমরা গভীরভাবে স্বীকার করি। আমরা আশা করি রাশিয়া বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, দৃঢ় সংকল্প এবং মহান আত্মত্যাগের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগ ২০১৪ ও ২০১৮ সালের প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। ভোট ডাকাতির অভিনব সব পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কলঙ্কিত ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।
বর্তমান সরকারের অধীনে বাংলাদেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় দাবি করে বিএনপি বলেছে, শেখ হাসিনার অধীনে অতীত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা, চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণে আমরা বিশ্বাস করি যে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণেই কোনো অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।