বাংলা নাটক ও চলচ্চিত্রের শক্তিশালী অভিনেতা আহমেদ রুবেল (৫৫) মা/রা গেছেন। বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মা/রা যান। প্রযোজক নুরুল আলম আতিক গণমাধ্যমকে তার মৃ/ত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রুবেলের মৃ/ত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সন্ধ্যায় আতিকের নতুন সিনেমা পেয়ার সুবাসের স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ে অংশ নেওয়ার কথা ছিল রুবেলের। আতিককে নিয়ে সিনেপ্লেক্সে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন তারকা। সিনেমাটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহমেদ রুবেল। কিন্তু আহমেদ রুবেল আর সিনেমাটি দেখেননি। পার্কিং লটে লিফটে ওঠার আগে গাড়িতে অসুস্থ বোধ করেন তিনি। এরপর তাকে দ্রুত স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা অভিনেতাকে মৃ/ত ঘোষণা করেন।
আহমেদ রুবেলের ৮১ বছর বয়সী বাবা আয়েশ উদ্দিন তার সন্তানের দুঃখ কীভাবে সামলাবেন তা নিশ্চিত নয়। গাজীপুরে ছায়াবীথির বাড়িতে থাকেন আয়েশ উদ্দিন। বাবাকে ছেড়ে চলে গেলেন রুবেল; কে জানত বিদায় হবে চিরতরে।
দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে এক ভাই হৃদরোগে মা/রা গেছেন। আহমেদ রুবেলও মা/রা গেছেন। চার বোনের মধ্যে দুই বোন থাকেন ঢাকায়, দুই বোন থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। আহমেদ রুবেলের স্ত্রীর নাম মনোয়ারা বেগম। রুবেল-মানোয়ারা দম্পতির কোনো সন্তান নেই।
আহমেদ রুবেলের আকস্মিক মৃ/ত্যু শোকাহত তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা। তাকে শেষবারের মতো দেখতে হাসপাতালে ভিড় জমান সহকর্মীরা। হাসপাতালে আসেন নির্মাতা প্রসূন রহমান, মতিয়া বানু শুকু, অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মমসহ অনেকে।
আহমেদ রাজীব রুবেল ওরফে আহমেদ রুবেল ১৯৬৮ সালের ৩ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের রাজারামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আয়েশ উদ্দিন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ইসলামপুর মহল্লায় তার মাতুতালয়। তবে ছোটবেলা থেকেই ঢাকার গাজীপুরে বড় হয়েছেন।
সেলিম আল দীনের ঢাকা থিয়েটার থেকে রুবেল অভিনয় শুরু করেন। তার অভিনীত প্রথম নাটক গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘স্বপ্নযাত্রা’। এরপর হুমায়ূন আহমেদের ‘পুষ্পকথা’, ‘বৃক্ষমানব’, ‘খোয়াবনামা’ নাটক তাকে সব শ্রেণীর দর্শকের কাছে জনপ্রিয় করে তোলে।
তবে একুশে টেলিভিশনের সিরিয়াল ‘প্রেত’ তাকে অভিনেতা হিসেবে আলাদা পরিচয় দেয়। মুহাম্মদ জাফর ইকবালের উপন্যাস অবলম্বনে আহির আলম এই সিরিয়ালটি নির্মাণ করেছেন। অনেক নাটক ও ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছেন রুবেল। এর মধ্যে রয়েছে সালাহউদ্দিন লাভলুর ‘রঙের মানুষ’ এবং মোস্তফা সারিয়ার ফারুকীর ‘৬৯’।
১৯৯৩ সালে ‘আখেরী হামলা’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে নাম লেখান রুবেল। পরে বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘চন্দ্রকথা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘ব্যাচেলর’, ‘গেরিলা’, ‘দ্য লাস্ট ঠাকুর’, ‘গেরিলা’, ‘মেঘলা আকাশ’, ‘অলাতচক্র’, ‘আলফা’, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ ইত্যাদি।