আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অর্থপাচার বন্ধ ও দুর্নীতি কমায় আন্তব্যাংকে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে দেশের ব্যাংকগুলোতে টাকার সংকট থাকলেও এখন ডলারের সংকট নেই। এমন পরিস্থিতিতে রিজার্ভে হাত না দিয়ে গত দুই মাসে আন্তব্যাংক থেকে ডলার নিয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের দেড় বিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আগে ব্যাংকগুলোতে ডলারের সংকট ছিল, কিন্তু বর্তমানে তা নেই। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের ডলার ব্যাংকগুলোতে জমা হয়, এবং ব্যাংকগুলো সেই ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকে বিক্রি করে। তিনি বলেন, আমরা রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি না করে আন্তব্যাংক থেকে সংগ্রহ করে ঋণ পরিশোধ করছি।
গভর্নর ব্যাখ্যা দেন, যেমন ইসলামী ব্যাংকে প্রচুর রেমিট্যান্স জমা হলেও তাদের কাছে টাকা নেই। আমরা সোনালী ব্যাংককে বা রূপালী ব্যাংককে বলেছি সমপরিমাণে টাকা দিয়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে ডলার নিয়ে সারের বকেয়া পরিশোধ করতে। তারা তাই করেছে। আগে বাংলাদেশ ব্যাংক সোনালী বা রূপালী ব্যাংককে রিজার্ভ থেকে ডলার দিতো। এই দুই মাসে রিজার্ভে হাত দিতে হয়নি।
তিনি আরও জানান, ডলার সংকটের কারণে আদানি, কাফকো, শেভরনসহ অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বাংলাদেশের বকেয়া ছিল সোয়া দুই বিলিয়ন ডলার। দুই মাসে দেড় বিলিয়ন পরিশোধ করা হলেও এখনও ৭০০ মিলিয়ন বকেয়া রয়েছে, যা শিগগিরই রিজার্ভ থেকে হাত না দিয়েই পরিশোধ করা হবে। আন্তব্যাংকে ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধির পেছনে দুর্নীতি ও অর্থপাচার রোধের বড় ভূমিকা রয়েছে।
গভর্নর আরও বলেন, ডলারের তুলনায় টাকার মূল্য বেশি হওয়ায় টাকার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে, এবং সুদও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি কমে আসছে এবং আমদানি খাতে অনিশ্চয়তাও হ্রাস পেয়েছে। তিনি আশা করেন, ডিসেম্বরের মধ্যে সব দায় পরিশোধ হয়ে গেলে অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে এবং আরও ঋণ সংগ্রহের পরিকল্পনাও রয়েছে।
সম্প্রতি বিদ্যুৎ ও সারের আমদানির জন্যও বড় অংকের অর্থ ব্যয় হয়েছে, যা দুই মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ পরিশোধ করার লক্ষ্য রয়েছে।