সম্প্রতি বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকটের তৈরী হয়েছে সেটির আভাস আগে থেকেই দেশের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা দিয়েছিল। তবে বিষয়টি সরকার গোপন রেখেছিল। কিন্তু বিশ্লেষকদের কোনো কথায় আমলে নেয়নি সরকার। সরকারে লুটপাট ও দুর্নীতির কারনে এমন পরিস্থিতির তৈরী হয়েছে বলে মন্তব্য করেন পিনাকী ভট্টাচার্য। এ বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন পিনাকী ভট্টাচার্য পাঠকদের জন্য সেটি নিচে তুলে ধরা হলো।
আমি গতবছর ডিসেম্বরে বলেছিলাম ফিগারের জাগলারি দিয়ে রিজার্ভ চুরি হয়েছে। এই চুরি তো পকেটে টাকা ঢুকায়ে হয়না। এই চুরি হয় ফিগারের গরমিল করে। ব্যাংক ফেইল করছে কারণ সেই টাকা লুটপাট হয়েছে। সেই লোপাট হয়ে যাওয়া ব্যাংকের তহবিলের যোগান দেয়া হয়েছে রিজার্ভ থেকে। আর রিজার্ভে দেখানো হচ্ছে এই টাকাটা রিজার্ভেই আছে। এইটা প্লেইন এন্ড সিম্পল চুরি। আমি কমেন্ট বক্সে দেয়া ভিডিওতে তাই বলেছিলাম।
তাই তো হইছে এখন। আট মাস পরে তো এই রিজার্ভের গেঞ্জামে দেশের অর্থনীতি মাজুল হইছে। এইটা তো আমি দেখাইছিলাম আট মাস আগে। আমি দেখাইছিলাম রিজার্ভে চোখ পড়ছে শকুনদের। এইটা খাইয়া দিবে। দিছে এখন খাইয়া? এখন চোখে পড়ছে না?
আর এই ভিডিও নিয়ে আমাকে হেনস্থা করছিলো এক বিজ্ঞ সাংবাদিক। সেই সাংবাদিকের কাছে নাকি তথ্য আছে যে একটা দেশের রিজার্ভ আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভে জমা থাকে। রিজার্ভে রিজার্ভে মিল তাই ফেডারেল রিজার্ভেই টেকা থাকিতে হইবে। যুক্তির মায়েরে বাপ।
সেই সাংবাদিকের এই জ্ঞানের খাতকও তৈরি হইছিলো। আমারে নিয়া বাংলার সো কল্ড সুশীল ইন্টেলেজিনশিয়ায় সে কি হাসাহাসি।
আমি নিজেই কনফিউজড হইয়া গেলাম। আমি তখনো পিএইচডি শুরু করি নাই। সর্বোন বিজনেস স্কুলে আমার এমবিএতে একোনমিকস অব ইউরোপীয় ইন্টিগ্রেশন পড়াইতেন সর্বোনের এক একোনোমিক্সের প্রফেসর তারে ই মেইল করলাম। জিগাইলাম আচ্ছা, একটা দেশের রিজার্ভের টাকা কই থাকে? সে বলে, কই থাকবে আবার সেই দেশের সেন্ট্রাল ব্যাংকে। মেইলটা ফ্রেঞ্চে ছিলো। আমি সেইটা অনুবাদ করে পাঠাইছিলাম সেই সাংবাদিকরে। সে সেইটা দেইখ্যা হা হা রিয়েক্ট দেয়।
আমি সেইদিন বুচ্চি এই সাংবাদিক একটা প্রি কন্সিভড আইডিয়াকে আকড়ায়ে থাকে। নিজের পজিশনকে সে কোশ্চেন করতে পারেনা। এতে অসুবিধা নাই। পৃথিবীর বেশীরভাগ মানুষই নিজের পজিশনকে কোশ্চেন করতে পারে না। তাই পৃথিবীর বেশীরভাগ মানুষই নতুন জ্ঞান উৎপাদন করতে পারেনা।
সাংবাদিক তথ্য দেয়। সে জাজমেন্ট করেনা। জাজমেণ্ট করলে সে সাংবাদিক থাকেনা, এক্টিভিস্ট হইয়া যায়। সাংবাদিক জ্ঞান উৎপাদন করেনা। বাংলাদেশের অধপাতে যাওয়ার একটা অন্যতম প্রধান কারণ সাংবাদিকদের জ্ঞানের উৎপাদক বলে মনে করা আর তার ফলেই সাংবাদিকেরাই দেশসেরা বুদ্ধিজীবী হইয়া যাওয়া। আবার তার উপ্রে যদি সেই সাংবাদিক মেগালোম্যানিয়ায় ভুগতে থাকে সেইটা আরো মারাত্মক হইয়া যায়।
প্রসঙ্গত, রিজার্ভ সংকটের মূল কারনটি প্রকাশ করা হয়নি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছে সরকার মন্তব্য করেন পিনাকী ভট্টাচার্য। সরকারের লুটপাটের ধারাবাহিকতায় দেশে আজ এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি জানান।