রিকশাচালক বেশে আন্দোলনে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা, ধরা পড়লেন যেভাবে

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে গত কয়েকদিন ধরে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন রিকশাচালকরা। তবে এই আন্দোলনে নতুন মোড় এসেছে, যখন ছদ্মবেশে রিকশাচালকদের সঙ্গে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে।

রোববার এমনই এক ঘটনায় দুইজন আন্দোলনকারী গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে ধরা পড়েন। তাদের একজন মাস্ক পরে নিজেকে রিকশাচালক হিসেবে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে তিনি তার আসল পরিচয় গোপন রাখতে পারেননি। একপর্যায়ে মাস্ক খুলে তিনি নিজের নাম আশরাফুল খান বলে জানান এবং খিলক্ষেতের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন।

ঘটনাস্থলে তোলা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যায় ওই ব্যক্তি নিজেকে একজন শিক্ষার্থী এবং রিকশাচালক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলছেন, “আমরা শিক্ষিত ছাত্রসমাজ। অনেক সময় লোকলজ্জার কারণে আমরা প্রকাশ করি না যে রিকশা চালাই। আমার পাশের ব্যক্তিটিও তিতুমীর কলেজের ছাত্র, সেও রিকশা চালায়।”

তবে মাস্ক খোলার পর তার পরিচয় প্রকাশ পায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আশরাফুল ময়মনসিংহের শেরপুরের গজনী এলাকার বাসিন্দা। ঢাকার খিলক্ষেতের পাতিরা পশ্চিম পাড়ায় ভাড়া থেকে ছাত্রলীগের পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। তার বাবা জিলানি একজন সাধারণ কৃষক।

আন্দোলনে শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততার অভিযোগও উঠেছে। তাদেরও মাস্ক পরে আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা গেছে। সাংবাদিকদের দেখামাত্র তারা সরে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

সাংবাদিক রাইহান বলেন, “রিকশাচালকদের আসল চেহারা সহজেই বোঝা যায়। কিছু চেহারা সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা আড়ালে চলে যায়। মাস্ক খুলতে বললেও তারা তা করতে রাজি হয়নি, যা আমাদের সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দেয়।”

এ ঘটনাগুলো রিকশাচালকদের চলমান আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এটি কি আসলেই রিকশাচালকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন, নাকি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত একটি পরিকল্পিত নাটক?