বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২য় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হ’/ত্যা করার ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে। ঢাকার একটি আদালত গতকাল (বুধবার) সহপাঠী আবরার ফাহাদকে হত্যার মামলায় বুয়েটের ২০ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে মৃ’ত্যুদন্ড দেন, যা সাম্প্রতিক সময়ে একক হ’/ত্যার বিচারে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃ’/ত্যুদণ্ডের রেকর্ড স্থাপন করেছে।
চার্জশিটভুক্ত ২৫ জন আসামিদের সবাইকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে হ’/ত্যার দায়ে অন্য যে অভিযুক্ত পাঁচজন তাদেরকে যাবজ্জীবন কা’/রাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার দিন রাতে শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে মা’রধর করা হয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃ’ত্যু হয়। ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান বুধবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করেন।
এই রায়ে আবরারের বাবা সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও খুশি হতে পারেননি মা রোকেয়া খাতুন। তিনি বলেন, হ’/ত্যাকাণ্ডের মূলহোতা অমিত সাহার মৃ’ত্যুদণ্ড দাবিতে আপিল করা হবে। বুধবার দুপুরে আবরার ফাহাদ হ’/ত্যা মামলার রায় ঘোষণার পরে কুষ্টিয়া শহরের নিজ বাড়িতে এসব কথা বলেন আবরারের মা রোকেয়া খাতুন। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আবরার হ’/ত্যা মামলার সব আ’সামির মৃ’ত্যুদণ্ড দাবি করেন রোকেয়া খাতুন বলেন, হ’/ত্যাকাণ্ডের মূলহোতা অমিত সাহা হ’/ত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে না থাকলেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সে হ’/ত্যাকাণ্ডের সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। অথচ তাকে মৃ’ত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি। কীভাবে সে মৃ’ত্যুদণ্ড থেকে বাদ যায় আমি বুঝতে পারলাম না। আপনারাও ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে দেখেছেন ২৫ আসামি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আবরার হ’/ত্যায় জড়িত ছিল। কীভাবে ৫ আ’সামির মৃ’ত্যুদণ্ড থেকে বাদ গেল।
রোকেয়া খাতুন বলেন, আববার হ’/ত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী অমিত সাহার মৃ’ত্যুদণ্ডের দাবিতে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। অমিত সাহা বুয়েট ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপসম্পাদক পদে ছিলেন। তাকে পরে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ। ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলের গেস্টরুমে আসামি কতিপয় ছাত্রলীগ নেতা সভা করে বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র আবরারকে হ’ত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পর দিন রাতে তাকে পি’টিয়ে হ’/ত্যা করা হয়। আবরার হ’/ত্যার ঘটনায় তার বাবা মো. বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলা করেন।
আজ রায় ঘোষণার সময় ২২ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি তিন আ’সামি এখনও পলাতক রয়েছে।
উল্লেখ্য, আবরার ফাহাদের রায় ঘোষনায় তার আপনজনেরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং তারা দাবি করেছেন অন্য ৫ জনকেও মৃ’ত্যুদন্ড দেওয়া হোক। তবে এই ঘটনায় ব্যপকভাবে সর্বোচ্চ শাস্তি’ দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের আপনজনেরা। তারা এটাকে অবিচার হিসেবে দাবি করেছেন। এই রায় দেশের জন্য একটি বড় ধরনের শিক্ষনীয় হবে বিপথগামী তরুন-যুবকদের জন্য এমনটা জানিয়েছেন আদালত।