দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), যাদেরকে রাখা হয়েছে দুর্নীতি দমন করতে। সমস্ত প্রশাসনের তদন্ত যখন বিফলে যায় সেখানেই দেখা মেলে দুদকের। কিন্তূ সেই দুদক বেআইনি কাজ করতে পারে এমনটা কি ভাবা যায়! হ্যাঁ সম্প্রতি বাংলাদেশে এমনই একটি প্রশ্ন উঠেছে দুদকের বিরুদ্ধে। যেখানে ঘুষের টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেওয়ার মত অভিযোগ উঠে এসেছে দুদকের বিরুদ্ধে।
ঘুষের ৯৩ লাখ টাকা জব্দের প্রায় দুই বছর পরও রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়নি দুদক। বিষয়টি গড়িয়েছে উচ্চ আলাদত পর্যন্ত। কী কারণে নিজেদের কাছে এতদিন রাখা হয়েছে জব্দ টাকা তা জানতে চেয়েছেন আদালত। পাশাপাশি কারো ব্যতয় থাকলে বলা হয়েছে দুদককে ব্যবস্থা নিতে।
গেল বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি। জেলা প্রশাসনের দুই সার্ভেয়ার ওয়াসিম ও ফেরদৌসের বাসায় অভিযান চালিয়ে ঘুষের ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকা জব্দ করে কক্সবাজার র্যাব।
পরে তফসিলভুক্ত অপরাধ হিসেবে সার্ভেয়ার ওয়াসিমসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। বাদী ছিলেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। তারপরই তদন্ত কর্মকর্তাকে বদলি করে দেয়া হয় পটুয়াখালীতে। পরিবর্তন হয় তদন্ত কর্মকর্তাও। টাকাসহ মামলার সব কাগজপত্র বুঝিয়ে দেয়া হয় সুপারভাইজিং অফিসারকে। তারপর দুই বছর কাটলেও সে টাকা জমা হয়নি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে।
বিষয়টি আদালতের নজরে এনে চলতি বছর রিট করে একটি মানবাধিকার সংস্থা। খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন আদালত।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর বের হবার পর মঙ্গলবার এ নিয়ে দুদকের কাছে জানতে চান আদালত। দুদকের আইনজীবী বলেন, যেহেতু টাকাটা র্যাব জব্দ করেছিল তাই দুদকের পক্ষে ওই টাকার নম্বর অনুযায়ী তালিকা করা যায়নি।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, আদালত বলেছেন আমাদের কাছে মনে হয়েছে এক বছর বা দেড় বছর এই সময়টা আইওজে তার কাস্টডিতে রেখে দিলো এটা আইনগতভাবে হয়েছে কিনা। কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখবে এবং কমিশন যদি বিষয়টি খতিয়ে দেখে তার কোনো দুর্বলতা পায় তাহলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে রিটকারী প্রতিষ্ঠানের আইনজীবী রাকিব হাসান বলেন, দুদক বলছে যে টাকাটা আমাদের কাছেই আছে এবং কমিশনই টাকাটা তুলে রেখেছে। তখন আমি বললাম যে টাকাগুলো রাখার আইনগত কোনো অধিকার দুদকের নাই।
দুদকের ভাষ্য, আইনে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জব্দ করা টাকা জমা দেয়ার সময় নির্ধারিত নেই। তবে যেহেতু সুনির্দিষ্ট মামলায় টাকা জব্দ দেখানো হয়েছে, তাই আদালতের অনুমতি নিয়ে তা জমা দেবে দুদক।
যদিও দুদক বলেছে টাকাগুলো তাদের কাছে সংরক্ষিত আছে আদালতের অনুমতি নিয়েই তারা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকাগুলো জমা করে দেবে। তবে সে টাকা এতদিনে জমা না দেওয়াই আজকের এই অবস্থা। আবার দুদক থেকে র্যাবকেও কিছুটা অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করার মত দৃশ্য মিলেছে এখানে। এখন অপেক্ষার বিষয় কবে দুদক টাকা জমা দেবে সেটা দেখার। তদন্ত শেষে হয়ত জানা যাবে এটা দুদকের বলা ঘটনার মত নাকি ভিন্নরকম! আর যদি ভিন্ন রকম হয় তাহলে এই ঘটনার সাথে জড়িত কারা আর তাদের বিরুদ্ধে আদালত কি ব্যবস্থা নেয়।