বিএনপির সম্মেলন ঘিরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও সহিংসতার পর পরিস্থিতি সম্পর্কে বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও চীনা রাষ্ট্রদূতসহ ৪৫টি কূটনৈতিক মিশনের রাষ্ট্রদূত বা প্রতিনিধিরা এতে অংশ নিতে এসেছেন। ব্রিটেনের ডেপুটি হাইকমিশনার, রাশিয়ার পলিটিকাল কাউন্সেলর এবং ভারতের ফার্স্ট সেক্রেটারি যমুনায় এসেছেন। এছাড়াও জাতিসংঘসহ ছয়টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও ব্রিফিংয়ে উপস্থিত রয়েছেন।
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমন্ত্রিতদের অবহিত করবেন মন্ত্রী। ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য উপস্থিত থাকবেন বলেও জানা গেছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে বিদেশি কূটনীতিক এবং জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ২৮ অক্টোবর শনিবার বিএনপি-জামায়াতের গণসমাবেশকে ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার আনুষ্ঠানিক তথ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরা হবে। ব্রিফিংয়ে জনসমাবেশকে ঘিরে বিএনপির তাণ্ডব এবং তা মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরা হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিদেশিদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন।
নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে অনড় বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো। এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।
আর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা বলে চলেছে। ব্রিফিংয়ে সংবিধান অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
সংবিধানবহির্ভূত নিরপেক্ষ বা নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠায় বিরোধী দলের দাবি মেনে নেওয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া, ব্রিফিংয়ে তাদের দাবির পিছনে সুশীল সমাজ বা কিছু বিদেশী যে ‘যুক্তি’ উপস্থাপন করেছে তা খণ্ডনের চেষ্টা করা হবে।
এদিকে ঢাকার রাজপথে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দূতাবাস গভীরভাবে মর্মা”হত। রোববার (২৯ অক্টোবর) সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এর এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে, ঢাকায় ইইউ দূতাবাস লিখেছে, “রাজধানী ঢাকার রাস্তায় সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং এর সদস্য রাষ্ট্রগুলি গভীরভাবে ম’র্মাহত। পোস্টটিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে এটি গুরুত্বপূর্ণ। অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথ খুঁজে বের করতে।
আর শনিবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকায় আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি-জামায়াতের মহাসমাবেশে পুলিশের সঙ্গে দিনভর সংঘ”র্ষ হয়। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। শনিবার (২৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক্স (আগের টুইটার) এক পোস্টে এই আহ্বান জানায়।
এদিকে শনিবার ব্যাপক সংঘ”র্ষের পর রোববার (২৯ অক্টোবর) দেশব্যাপী হরতাল পালন করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। হরতালের পর আবারও মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার সারাদেশে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।