নির্বাচন কমিশন গঠন কে কেন্দ্র করে চলছে দফায় দফায় আলোচনা। যেখানে আলোচনা করা হচ্ছে রাষ্ট্রপতি সঙ্গে বাংলাদেশের অন্যান্য দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে। তবে এ নির্বাচন কমিশন গঠনে বারবার চিঠি দেওয়া হল বিএনপিকে পাওয়া যায়নি। অবশেষে বিএনপি জানিয়ে দিলো তারা নির্বাচন কমিশন গঠনের আসতে চান বা সেইসাথে না আসতে চাওয়ার কারণে বলে দিল। আখ্যা দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনে আসা অনেকটা অর্থহীন।
ঢাকা- নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ যে সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছেন, তাকে অর্থহীন আখ্যা দিয়ে বিএনপি বলছে, তারা এতে অংশ নেবে না।
গত সোমবার দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
ওই বৈঠকের বিষয়বস্তু তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নিবন্ধনকৃত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংলাপের বিষয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিএনপি মনে করে, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ প্রশাসনের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ব্যতীত নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সংলাপ শুধু সময়ের অপচয়।’
তিনি বলেন, ‘গত দুইটি নির্বাচন কমিশন গঠনের পূর্বে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে নিবন্ধনকৃত রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছিল। বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করেছিল। কিন্তু সব উদ্যোগই ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচনকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্রকে বেআইনি ব্যবহার, নির্বাচন কমিশনের চরম ব্যর্থতা, অযোগ্যতার কারণে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের দলীয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পরপর দুটি নির্বাচন কমিশনই চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ২০১২ সালে সংবিধান পরিবর্তন করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান বলবত করে প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র বিকাশের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে। জনগণ তার ভোটের অধিকার হারিয়েছে।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলীয় সরকার বহাল রেখে নির্বাচন কমিশন কখনোই স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবে না। বিএনপি বিশ্বাস করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ব্যতিরেকে সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনো নির্বাচন কমিশনই অনুষ্ঠান করতে পারবে না।’
‘রাষ্ট্রপতি নিজেই বলেছেন, তার কোনো ক্ষমতা নেই পরিবর্তন করার। সেই কারণে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ কোনো ইতিবাচক ফলাফল আনতে পারবে না। বিএনপি অর্থহীন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করবে না।’
যতদূর দেখা যাচ্ছে বিএনপি নির্বাচন কমিশনে আসবেনা। বিএনপি’র যে দাবিগুলো আছে দাবিগুলো মেনে না নেওয়া হলে তারা রাস্ট্রপতির সাথে বসা অর্থহীন বলে দাবি করছে। এখন দেখার বিষয় রাষ্ট্রপতি তাদের দাবিগুলো মেনে নেয় কিনা বা সেরকম কোন সুযোগ থাকে কিনা। নানান দিক ঘিরে এখন প্রশ্ন ঘোরাঘুরি করছে। তবে শেষমেষ কি হবে এখনও বলা যাচ্ছে না।