দেশে চলছে একাদশ জাতীয় সংসদ। আর এই একাদশ সংসদেই ঘটেছে বড় একটি রেকর্ড।আর তা হলো এই সংসদের মেয়াদকালের মারা গেছেন ২৬ জন এমপি। বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদের যাত্রা শুরু হয় ৩০ জানুয়ারী, ২০১৯ তারিখে। এর মেয়াদ শেষ হবে ২৯ জানুয়ারী, ২০২৪-এ।
সেই হিসেবে বর্তমান সংসদের চার বছর পূর্ণ হয়েছে ২৯ জানুয়ারি। এই সময়ের মধ্যে ২১টি অধিবেশনে মোট কার্যদিবস সংসদ ছিল ২৭৫ দিন। করোনা পরিস্থিতির কারণে বেশির ভাগ সেশনই ছিল ছোট। সংসদীয় কমিটির কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে বর্তমান সংসদের রেকর্ড সংখ্যক ২৬ জন সদস্য পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর নানা নাটকীয়তার পরও বিএনপির সংসদে ফেরার পাশাপাশি প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির বিদায়ের কারণে বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে আলোচনায় সংসদ অধিবেশন প্রাণবন্ত ছিল। সরকার ও প্রকৃত বিরোধী দলের ভূমিকায় ফিরছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হলেও সংসদে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা।
নির্বাচনে ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর শপথ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংসদ সদস্যরা। কিন্তু নানা নাটকীয়তার পর তারা বর্তমান সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে যোগ দেন। আর এতে পাল্টে যায় সংসদ অধিবেশনের চিত্র।
বর্তমান সংসদের চার বছরে বিরোধীদলীয় নেতা এইচ এম এরশাদ, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনসহ বর্তমান সংসদের ২৬ সদস্য মারা গেছেন। বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্যদের মৃত্যুতে সংসদ ভবনে জানাজার রেওয়াজ থাকলেও গত বছর করোনার কারণে তা করা হয়নি। তবে সংসদে শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
আলোচিত ঘটনাটি ছিল লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের কুয়েতের আদালতে সাজা। মানব পাচার এবং অর্থ পাচারের জন্য কুয়েতের একটি আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করার কারণে সংসদ সদস্য হিসাবে তার অবস্থান প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
চার বছরের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের কালের কণ্ঠকে বলেন, সংসদে বিরোধী দলের যে ভূমিকা পালন করার কথা জাতীয় পার্টি তা পালন করছে। আমরা সংসদে দাবিগুলো তুলে ধরছি। সংসদ এখন জীবিত। বিরোধী দল সংসদে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরছে।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সংসদ বর্জনের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে সব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ। বিগত চার বছরে জাতীয় গুরুত্ব ও জনস্বার্থের বিষয় নিয়ে সংসদে বিতর্ক হয়েছে, যে কারণে বর্তমান সংসদ বেঁচে আছে। করোনার সময়েও সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী সংসদের অধিবেশন নিয়মিত বসেছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে একাদশ জাতীয় সংসদের সময়কাল থেকেও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কারণ ২০২৪ সালেই অনুষ্ঠিত হবে এই নির্বাচন। আর এই আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখেই ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বেশ আলোচনা সমালোচনা। বিশেষ করে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে কে হাসবে শেষ হাসি এটা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে সবাই।