যাত্রাকালীন এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে, এমনটা ভাবতেও পারেননি কেউ। গতকাল বুধবার (৩ আগস্ট) মধ্যরাতে যাত্রী সেজে টাঙ্গাইলের একটি বাসে ডাকাতিসহ এম নারীর সঙ্গে খারাপ কাজের ঘটনায় রীতিমতো সারা-দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক শোরগোল। এদিকে জানা গেছে, স্বতিত্ব হারানো সেই নারী এই মুহুর্তে টাঙ্গাইলের আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পুলিশি নিরাপত্তায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার পর বুধবার সকাল থেকে টাঙ্গাইলের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পুলিশি নিরাপত্তায় থাকা ওই নারী জানান, তিন জায়গা থেকে ডাকাতরা বাসে উঠেছিল। এবং তাদের একজনের সাথে একটি সিটে বসার জন্য তার এবং বাসের ঠিকাদারের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে সিরাজগঞ্জের হোটেলের স্টপেজ থেকে শেষ পর্যন্ত গণমাধ্যমের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন কুষ্টিয়ার বাসিন্দা ও এক পরিবহন শ্রমিকের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী নৈশ কোচে একদল ডাকাত এসে যাত্রীদের মারধর ও মালামাল লুট করে। পরে বাসে এক নারীর সঙ্গে খারাপ কাজ করে।
বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মধুপুরের রক্তপাড়া জামে মসজিদের বিপরীতে মুজিবরের বাড়ির সামনে বালির পাড়ে বাসটি তুলে নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।
এ ঘটনায় বাসের যাত্রী হেকমত আলী বাদী হয়ে বুধবার রাতে টাঙ্গাইলের মধুপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ১০ থেকে ১২ জন সদস্য তিন ঘণ্টা বাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটায়। এদিকে রাজা মিয়া নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। যারা আসল বাস চালককে সরিয়ে বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ওই তরুণী বলেন, “কুষ্টিয়ার একটি জায়গা থেকে উঠেছি। রাত সাড়ে এগারোটায় সিরাজগঞ্জের হোটেলে পৌঁছেছি। খাওয়া-দাওয়া শেষে গাড়ি স্টার্ট দেয়; তারপর পাঁচ মিনিট পর তিনজন ছেলে উঠে। বয়স ২০ থেকে ২২ বছর।
“তারপর তারা বলেছিল আমাদের সামনে আরও লোক রয়েছে। তারপর আরো চারজন উঠল। তাদের মধ্যে আরেকজন বলেন, আমার সামনে আরও লোক আছে। সিরাজগঞ্জের মধ্যে আরও ছয়জন উঠে। তাদের পিছনে সিট দিয়ে দেয়।”
নিজেকে একজন পরিবহন শ্রমিকের স্ত্রী দাবি করে ওই নারী বলেন, “আমার দুটি আসন আছে। একটি ফাঁকা, একজন মহিলা আসলে এখানে বসবে, অন্যথায় এটি খালি হবে। তখন তাদের একজন আমার সিটে বসতে গিলে ঠিকাদারকে উঠিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর ঠিকাদার এসে আমার সিটে বসে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।
“কিছুক্ষণ পর তিনজন ড্রাইভারের কাছে এসে বললো, ‘আমরা নামবো।’ এরপর চালকের গলায় ছুরি বেঁধে দেওয়া হয়। তারপর তিনি চালক ও হেলপারকে তুলে নিয়ে আসেন। বাসের পেছনে নিয়ে এসে আটকায়ে দেয়। সাথে সাথে কন্ট্রাকটকেও তুলে নেয়।”
ওই নারী আরও বলেন, “তারপর যাত্রীদের মধ্যে বেটা ছেলেদের সবাইকে বেঁধে ফেলে। মুখও বেঁধে ফেলে। পরে মেয়েদেরও বেঁধে ফেলতে শুরু করে। টাকা-পয়সা মোবাইল সবই কেড়ে নেয়। কারও গহনাও নিয়ে নেয়।”
“তখন আমার সাথে… জেরা করছিলাম… তখন এমন খারাপ কাজ করে। একাই।”
এদিকে ঐ নারীরির বর্তমান শারীরিক অবস্থার খবর নিশ্চিত করে টাঙ্গাইল সদর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। বর্তমানে তিনি শঙ্কা মুক্ত বলেও জানিয়েছেন তিনি।