বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। দেশ ও দেশের বাইরে শান্তি বজায় রাখাই বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রীক দেশ। এই গণতান্ত্রিক দেশে রয়েছে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি হল অন্যতম। আওয়ামী লীগ হচ্ছে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল। দলটি পরপর তিনবার বাংলার ক্ষমটায় এছেসে কেননা আওয়ামী লীগককে বনাগলার মানুষ অনেক ভালোবাসে। সম্প্রতি জানা গেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলার পর মামলা করেছে ছাত্রলীগ।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অপরদিকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমানসহ ১০ জনের অজ্ঞাতনামা দেড়শ বিএনপি সমর্থকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক হানিফ মিয়া বাদী হয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের অভিযোগে রূপগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- মাসুদুর রহমান, মাসুম, সাহাবুদ্দিন, ওমাইনী, বাবু, শিশির, রনি হাসান মতি, সাব্বির, রাতুল, আলামিন। মামলার পর থেকে গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন নেতাকর্মীসহ বিএনপি সমর্থকরা। অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
মামলার বাদী ও ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক হানিফ মিয়া মামলার জবানবন্দিতে জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে লাঠি, ককটেল, পিস্তল, রামদা ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত উল্লেখিত ১০ জনসহ অজ্ঞাত দেড় শতাধিক ব্যক্তি তাকে হত্যা করে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আওখাব অনুপম গার্মেন্টের সামনে মশাল মিছিল। টায়ারে আগুন ধরিয়ে দিন। এসময় আমিন ও সানিকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে চাচা রুহুল। পরে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৩টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়।
জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিল চলাকালে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আহত করে। তখন আমার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। তারা ভাঙচুর থামাতে গেলে বাবা সাহাবুদ্দিন ও মাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এছাড়া যুবদল নেতা নূরুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।
মাসুদুর অভিযোগ করে বলেন, উল্টো আমাদের ওপর হামলা করে বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমাদের নামে মামলা করা হয়েছে।
চাঁনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্রের বিএনপির সভাপতি হারুন মিজি অভিযোগ করেন, গডফাদার ইউপি সদস্য বজলুর রহমান বজলুর নির্দেশে বুধবার রাত ১১টার দিকে চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় সন্ত্রাসীরা অস্ত্রে সজ্জিত ও সন্ত্রাসী সিটি শাহীনের নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় বিএনপি কর্মী হযরত আলীর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ৬নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি মাসামকে পিটিয়ে আহত, তার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। বিএনপি নেতা ইউসুফ আলীর বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করা হয়েছে।
তবে ইউপি সদস্য বজলুর রহমান বজলুরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহাফুজুর রহমান হুমায়ুন বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট করা হচ্ছে। আহত হচ্ছেন নেতাকর্মীসহ পরিবারের সদস্যরা। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করা না হলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সৈয়দ বলেন, এক পক্ষ অভিযোগ করে মামলা নিয়েছে। অন্য পক্ষ অভিযোগ করলে তাও তদন্ত করে মামলা করা হবে।
প্রসঙ্গত, মারামারি হাঙ্গামা কখনই কারো জন্য ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে না। আপোসের মাধ্যমে সকল সমস্যার সমাধান করাটাই দেশ ও জাতির জন্য অনেক মঙ্গলজনক। সকল হানাহানি ও বিদ্বেষ ভুলে সবাই দেশের মঙ্গলের জন্য একত্র কাজ করা উচিত। লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন করেছে বীর সন্তানরা। তাই দেশের সার্বিক কল্যানের জন্য সকল অরাজকতা থেকে দুরে থাকাই উচিত বলে মনে করেন দেশের সাধারণ মানুষ।