রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ হলেন অত্যন্ত ভদ্র একজন মানুষ। তিনি বাংলাদেশের ২১ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এই অতি সম্মানীয় পদে আসীন হবার পর থেকে সততা ও নিষ্ঠার সহিত করে যাচ্ছেন দায়িত্ব পালন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অত্যন্ত বিচক্ষণ একজন বক্তিও বটে। সম্প্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন ব্যবসায়ীদের রাতারাতি বড়লোক হবার মানসিকতা ছাড়তে হবে।
‘একজন উদ্যোক্তা শুধু নিজের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করেন না, তিনি অন্যদেরও কর্মসংস্থান করেন। তাই আমি যুবকদের চাকরির জন্য তাড়াহুড়া না করে তাদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি বিনিয়োগ করে স্বাবলম্বী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। রাষ্ট্রপতি রাতারাতি ধনী হওয়ার মানসিকতা ত্যাগ করে সততার সঙ্গে ব্যবসাবান্ধব হওয়ার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। আব্দুল হামিদ।
সোমবার সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে এমএসএমই (মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম সেক্টর) দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় রাষ্ট্রপতি এ মন্তব্য করেন। সোমবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন রাষ্ট্রপতি মো.
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে মো. আবদুল হামিদ বলেন, “আপনাদের প্রতি আমার পরামর্শ হল রাতারাতি ধনী হওয়ার মানসিকতা ত্যাগ করুন। আপনার ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে হলে আপনাকে সৎ হতে হবে এবং আপনার ক্রেতার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে।
‘ব্যবসা একটি মহান পেশা। ব্যবসায়ীদেরও সতর্ক থাকতে হবে এবং সরকারের সাথে সহযোগিতা করতে হবে যাতে কিছু অসাধু লোকের জন্য পুরো ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সুনাম ক্ষুণ্ন না হয়। ‘
আগামী দিনে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা বড় ব্যবসায়ী হয়ে উঠবে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “দেশের অনেক শিল্পগোষ্ঠী স্বল্প পুঁজিতে ছোট পরিসরে যাত্রা শুরু করেছে। মেধা, নিষ্ঠা, অধ্যবসায় ও সততাকে পুঁজি করে তারা সক্ষম হয়েছে। ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করতে এবং তাদের ব্যবসাকে একটি শক্ত ভিত্তির উপর গড়ে তুলতে।’
কিন্তু এর বিপরীত চিত্রও রয়েছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি মো. “কিছু লোক তাদের ব্যবসা শুরু করে এবং রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখে,” তিনি বলেছিলেন। রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-তুফানের নানা অজুহাতে তারা অযৌক্তিকভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায়। তারা মানবতার চেয়ে ব্যবসার লাভকে বেশি মূল্য দেয়। মানুষের অসহায়ত্বই তাদের ব্যবসার মূল পুঁজি। ‘
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমএসএমই খাতের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সুষম উন্নয়ন সম্ভব।
আবদুল হামিদ বলেন, দেশের শিল্প খাতে নতুন বিনিয়োগ আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ পদক্ষেপ ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে।
‘এটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বড় আকারের শিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের বিকাশ ও প্রবৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করেছে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিতেও পদ্মা সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এমএসএমইকে একটি শ্রম-ঘন এবং স্বল্প-পুঁজির খাত হিসাবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “এই সেক্টরে উদ্যোক্তাদের খুব বেশি দক্ষতা এবং পরিকাঠামোর প্রয়োজন হয় না। স্বনির্ভর হওয়ার ইচ্ছা থাকলে যে কেউ ক্ষুদ্র বা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হতে পারে। ‘
দেশের তরুণরা লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পেছনে ছুটছে বলে রাষ্ট্রপ্রধান অখুশি। “সবার জন্য চাকরি পাওয়া অসম্ভব,” তিনি বলেন। একমাত্র বিকল্প হচ্ছে শিক্ষিত বেকার যুবকদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা।
‘একজন উদ্যোক্তা শুধু নিজের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করেন না, তিনি অন্যদেরও কর্মসংস্থান করেন। তাই আমি যুবকদের চাকরির জন্য তাড়াহুড়া না করে তাদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি বিনিয়োগ করে স্বাবলম্বী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। ‘
২০২৬ সালে বাংলাদেশ অবশেষে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, তখন অন্যান্য খাতের মতো শিল্প খাতের জন্যও নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে, তবে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জেরও মোকাবিলা করতে হবে। ” এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এখন থেকেই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতির প্রত্যেকটি কথা হলো খুব মূল্যবান। তিনি যেকোনো কথা বলেন অনেক জ্ঞান খাটিয়েই বলেন। তার মতো একজন বিচক্ষণ রাষ্ট্রপতি পেয়ে বাংলার মানুষ সত্যিই অনেক গর্বিত। তিনি বাংলার মানুষের জন্য আদর্শ। রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত একজন নেতা।