তুমি কে? আমি কে? ‘রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সোশ্যাল মিডিয়া। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতারা এ বিষয়ে মতামত দিয়েছেন।
রাজাকার শব্দটি নিয়ে সরকারি দলের নেতারা নানা রকম বিরূপ মন্তব্য করলেও শিক্ষার্থীরা কেন ‘রাজাকার’ শব্দটি বলেছেন তা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল আদ্বিত্য পিয়াস নামে সাবেক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর পোস্ট নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন।
যেখানে বলা হয়, ‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার।’ আমরা জানি রাজাকার শব্দটি বাংলাদেশের সবচেয়ে ঘৃণিত শব্দ। তাহলে শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে রাজাকার বলছে কেন?
উত্তর: ‘ ‘কেউ একজন’ আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সমাজকে রাজাকার বলেছেন সেই প্রতিবাদে সীমাহীন দুঃখকষ্টে বুকে নিয়ে বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত, অধিকারবঞ্চিত শিক্ষার্থী সমাজের নিজেদেরকে এই ‘রাজাকার’ বলাটা যে একটা শক্তিশালী আয়রনি, অনেক বড় একটা প্রতিবাদ এই সামান্য বিষয়টি আমাদের আশপাশের অনেক বলদ বুঝবে না। এই সামান্য জিনিস বোঝার জন্য মাথায় কিছু জ্ঞানও তো থাকতে হয়!
রোববার মধ্যরাতে হঠাৎ কোটাবিরোধী আন্দোলনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এদিন বিকেল থেকেই মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকা ইস্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। সরকারের একটি কথার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও নিজেদের রাজাকার ঘোষণা করে স্লোগান দিতে থাকে।
বিষয়টি একসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ক্যাম্পাসের হলগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। রাতে হঠাৎ করে তারা সরকার প্রধানের মন্তব্যের প্রতিবাদ করে এবং নিজেদের রাজাকার ঘোষণা করে স্লোগান দিতে থাকে। এক সময় ঢাবি হল থেকে বের হয়ে রাতে শাহবাগে মিছিলে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাস্তায় নামে। তারা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার-রাজাকার’।
শিক্ষার্থীদের এমন স্লোগান নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। এমনই প্রেক্ষাপটে রোববার রাতে ফেসবুকে উল্লিখিত পোস্ট দেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ডা. দীপু মনি।
রোববার তার ফেসবুক পোস্টে শিক্ষামন্ত্রী লেখেন, যারা বলে, আমি রাজাকার, তারা প্রমাণ করছে তারাই এ যুগের ‘আসল’ রাজাকার! যারা প্রকাশ্যে নিজেদের পরিচয়, জন্ম পরিচয়, ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে ‘রাজাকার’ স্লোগান দিয়েছেন, তারা সবাই এ যুগের রাজাকার।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, “যারা নিজেদের রাজাকার বলে পরিচয় দেয়, তাদের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের রক্তে ভেজা লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে মিছিল করার বা কপালে বাঁধার অধিকার নেই।”