বিএনপি ক্ষমতাসীন দল আ.লীগ সরকারকে হটানোর জন্য আন্দোলনকে সামনে রেখে দলের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৩ নভেম্বর রাজশাহীতে সমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি। সমাবেশে যাতে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেজন্য ৮টি শর্ত জুড়ে দিয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) পুলিশের পক্ষ থেকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের পক্ষে সিটিএসবি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ অনুমতি দেওয়া হয়।
শর্তগুলো হল:
সকল সমাবেশ কার্যক্রম মাদ্রাসার মাঠে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সমাবেশস্থলের আশপাশসহ কোনো অবস্থাতেই জনসমাগম ও যান চলাচল ও জনসাধারণের চলাচলে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। নিরাপত্তার জন্য, সমাবেশে যারা আসছেন তাদের চেক করার ব্যবস্থা করতে হবে এবং তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দৃশ্যমান আইটি কার্ড সহ পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে।
দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং আর্থ-সামাজিক মূল্যবোধ, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এবং জাতীয় নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করে এমন কোনো কার্যকলাপ ও উ”স্কানিমূলক বক্তৃতা এবং প্রচারপত্র বিতরণের অনুমতি দেওয়া যাবে না।
সমাবেশে আসা-যাওয়ার পথে শোভাযাত্রা ও মিছিল করাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশ”/ঙ্কা থাকে এমন কর্মকাণ্ড করা যাবে না। ব্যানার-ফেস্টুন ও পতাকার জন্য কোনো লাঠি, সোটা ও রড ব্যবহার করা যাবে না। ব্যানার, ফেস্টুন ইত্যাদির ব্যবহার সীমিত রাখতে হবে।
আজান, নামাজ এবং অন্যান্য ধর্মীয়ভাবে স্প”র্শকাতর সময়ে মাইক বা শব্দ সরঞ্জাম ব্যবহার করা যাবে না। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কোনো বিষয়ের ব্যঙ্গচিত্র, বক্তৃতা বা অন্য কিছু প্রচার করা যাবে না।
৩ তারিখের সমাবেশ শুরুর আগে মঞ্চ প্রস্তুতির সঙ্গে জড়িতরা ছাড়া অন্য কাউকে সভাস্থলে প্রবেশ বা থাকতে দেওয়া হবে না। সমাবেশের সকল কার্যক্রম দুপুর ২টায় শুরু হয়ে বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ নেতাকর্মীরা যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য দায়িত্বশীল নেতা বা সংগঠকদের সেই দায়িত্ব নিতে হবে।
নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সভাস্থলের ভেতরে ও বাইরে উচ্চ রেজুলেশনের সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। সমাবেশস্থলের বাইরে বা রাস্তার পাশে প্রজেক্টর/মাইক/সাউন্ড বক্স ব্যবহার করা যাবে না। সমাবেশস্থলে ইন্টারনেট সংযোগ, ব্রডব্যান্ড সংযোগ ও রাউটার ব্যবহার করা যাবে না।
সমাবেশস্থলে আসা যানবাহনকে শহরের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। রাস্তা অবরোধ করা এড়িয়ে চলতে হবে। গাড়ি অবশ্যই নির্ধারিত পার্কিং এলাকায় পার্ক করতে হবে। প্রধান সড়কে পার্কিং করা যাবে না।
এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়। স্থান ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। কর্তৃপক্ষ জনস্বার্থে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই অনুমতি আদেশ বাতিল করার অধিকার সংরক্ষণ করে। উল্লেখিত শর্তগুলো যথাযথভাবে পালন না করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিশাল সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তবে ডিএমপি নয়াপল্টনে সমাবেশের বদলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। বিএনপি’র পক্ষ থেকে ডিএমপির নির্দেশনা না মেনে পল্টনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে বিএনপির এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কোন অবস্থানে যাবে পুলিশ সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।