Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / International / ভালোবাসা নিয়ে আদালতকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন গৃহবধূদের নিয়ে পালানো সেই দুই রাজমিস্ত্রী

ভালোবাসা নিয়ে আদালতকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন গৃহবধূদের নিয়ে পালানো সেই দুই রাজমিস্ত্রী

সাম্প্রতিক সময়ে দুই রাজমিস্ত্রির হাত ধরে দুই গৃহবধূর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা সাড়া ফেলে পুরো নেট দুনিয়ায়। ঐ দুই গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয় তাদেরকে অপহরণ করেছে ঐ দুজন রাজমিস্ত্রি। তবে আদালতে ঘটনার শুনানীর পর তাদেরকে জামিন দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করে। ভারতীয় একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম এমন খবর প্রকাশ করে। গত ৬ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) হাওড়া জেলা আদালতে অভিযুক্ত ঐ দুই রাজমিস্ত্রিকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া পর সেখানে এসে দেখা হয় ঐ দুই গৃহবধুর সাথে। সেখানে দুই গৃহবধু অনন্যা ও রিয়ার প্রতি তাদের প্রেমময় অনুভূতি প্রকাশ করেন। তারা দুজন মন থেকে তাদেরকে ভালোবাসে। তারা এটাও জানান সবকিছু ভালোবেসেই হয়েছিল কিন্তু এর অন্যথা হলে সেটা হবে মিথ্যা ও কারসাজি।

তারা জানান, ভুল বোঝানোর মাধ্যমে ওই দুই গৃহবধূকে নিয়ে পালিয়ে যাননি তারা। বরং তাদেরকে তাদের মন থেকে ভালোবেসেছিল। রাজমিস্ত্রিরা তাদের সাথে সংসার করতেও চাইছিলেন। রাজমিস্ত্রি শুভজিৎ ও চন্দ্রশেখরের প্রশ্ন: ‘আমরা রাজমিস্ত্রি, তাই বলে কী আমরা মানুষ নই? আমাদের কি মন নেই, নাকি আমাদের কাউকে ভালোবাসতে নেই? ভারতের হাওড়া জেলা আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে এ কথাগুলো বলেন বালির নিশ্চিন্দা এলাকা থেকে দুই গৃহবধূকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া দুই রাজমিস্ত্রি শুভজিৎ দাস ও চন্দ্রশেখর মজুমদার।

অভিযুক্তদের আইনজীবী তারকনাথ বাগানি জানিয়েছেন, অপহ’রণের মামলা হলেও, পুলিশ ফাইনাল রিপোর্টে কিছু খুঁজে পায়নি। ফলে তাদের জামিন দিয়েছেন। অপর আইনজীবী শীর্ষেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, কেউ নিজের ইচ্ছেয় কাউকে ভালোবাসতেই পারে। এতে কোনো দোষ নেই। তবে যেহেতু মেয়েগুলো বিবাহিত, তাই আইনি জটিতা রয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদের পর তারা বিয়ে করতে পারেন।

প্রসঙ্গত, ১৫ ডিসেম্বর শ্রীরামপুরে শীতের পোশাক কেনাকাটা করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন কর্মকার পরিবারের দুই বউ। সাত বছরের নাতিকে সঙ্গে নিয়েই বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন বড় বউ অনন্যা কর্মকার ও ছোট বউ রিয়া কর্মকার। তার পর সেদিন বিকাল থেকেই তাদের আর কোনো খোঁজ পায়নি পরিবার। একদিকে মোবাইল সুইচড অফ।

অন্যদিকে বিভিন্ন আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতের বাড়ি গিয়েও কোনো খোঁজ মেলেনি। শেষবারের মতো তাদের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন পাওয়া যায় শ্রীরামপুরের রয় এমসি ভাদুড়ি লাহিড়ি স্ট্রিটে। এ পরিস্থিতিতে তদন্তে নেমে একটি ফোন নম্বর উঠে আসে তদন্তকারী অফিসারদের হাতে।

ওই নম্বরের সূত্র ধরেই পুলিশ জানতে পারে যে, মুর্শিদাবাদের সুতির বাসিন্দা দুই রাজমিস্ত্রির সঙ্গে পালিয়ে গেছেন দুই বউ। মাস ছয়েক আগে নিশ্চিন্দার কর্মকার বাড়ি নতুন করে তৈরি করা হয়। সেই সময় বাড়িতে কাজ করতে এসেছিলেন সুভাষ ও শেখর নামে দুই রাজমিস্ত্রি। তখনই বাড়ির দুই বউয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় দুজনের। রাজমিস্ত্রিদের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বাড়ির দুই বউয়ের। এর পরই সুতিতে সুভাষের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। কিন্তু ততক্ষণে তারা আবার মুম্বাইতে পালিয়ে গিয়েছিলেন।

পুলিশ সূত্র মোতাবেক প্রাপ্ত খবর, মুম্বইয়ে যাওয়ার পর তাদের নিকট থাকা টাকা ফুরিয়ে যায়। আর কোনো উপায় না দেখে তারা তাদের রাজ্যে ফিরে যাবেন এমন ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। আসানসোলে পৌছানোর পর সেখানে তারা অন্য একটি ট্রেনে উঠবে এমন খবর জানতে পারে পুলিশ। তাই সেই অনুযায়ী পুলিশ সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিল। আসানসোল স্টেশনে পুলিশ তাদের শেষ পর্যন্ত ধরতে সক্ষম হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঐ দুই রাজমিস্ত্রি ও দুই গৃহবধুকে পাকড়াও করে নিয়ে থানায় যায় পুলিশ।

About

Check Also

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিকের অভিযোগ, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া এবং সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দাবি তোলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *