জেনারেল মঈন উদ্দিন আহমেদ ( Moin Uddin Ahmed ) ছিলেন বাংলাদেশের ( Bangladesh ) সেনাবাহিনীর ( army ) প্রধান। তিনি দীর্ঘদিন এই পদে বহাল থেকে সফলতার সহিত তার দায়িত্ব পালন করে গেছেন। সবার মনেই কোনো না কোনো আশা থাকে। এক জনের আশা-আখাঙ্কা মূলত অন্যজনের থেকে ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে জেনারেল মঈন আহমেদের আশা ছিল তিনি দেশের রাস্ট্রপতি হবেন। কিন্তু রাজনীতির মারপ্যাঁচে ভেঙ্গে যায় তার স্বপ্ন।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন জেনারেল মইন। কিন্তু আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব এতে রাজি না হওয়ায় দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। জেনারেল মইনের স্বজনদের কাছ থেকে এমনটাই জানা গেছে। ১/১১-এর নায়ক জেনারেল মইন ২০০৭ সনে ক্ষমতা নিয়েছিলেন দুটো উদ্দেশ্যে। এক, জিয়া অথবা এরশাদ হবেন। দুই, রাজনৈতিক সরকারের প্রেসিডেন্ট হবেন। তবে তার অন্য তিন সহকর্মী জেনারেল মাসুদ, জেনারেল আমিন এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বারী দৃঢ়ভাবে দ্বিমত পোষণ করেন। তাদের কেউ কেউ তাকে সামরিক শাসন জারি করার পরামর্শ দেন। তবে বহির্বিশ্ব থেকে তেমন উৎসাহ পাচ্ছিলেন না মইন। জেনারেল মইনের ঘনিষ্ঠ অন্তত দুজন বলেছেন, সামরিক-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে দেশকে ঠিক করতে ব্যারাকে ফিরে আসাই ভালো হবে।
এ অবস্থায় জেনারেল মইন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে তোলেন। তখন তাকে আশ্বস্ত করা হয় যে তাদের দল ক্ষমতায় এলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। এতে মইন আশ্বস্ত হয়। খুশিতে গলে গেল। এর কিছুদিন পর জেনারেল মইন ভারত সফরে আসেন। সেখানেও তিনি সবুজ সংকেত পেয়েছেন বলে জানা গেছে। চারটি ঘোড়া নিয়ে দেশে ফিরেছেন মইন। যা ‘ঘোড়া কূটনীতি’ নামে বেশি পরিচিত। দেশে ফিরে জেনারেল মইন নির্বাচনে একতরফা ভূমিকা পালন করেন। নির্বাচনের দিন বিকেল ৩টায় তিনি আনন্দের সঙ্গে একজন বিদেশি কূটনীতিককে বলেছিলেন, মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশ আসন জিতবে। নির্বাচনের এখনও এক ঘণ্টা বাকি। আওয়ামী লীগ জিতেছে। এতে স্বভাবতই খুশি আওয়ামী লীগ। জেনারেল মইনের খুশির শেষ নেই। তিনি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে নানাভাবে বার্তা পাঠাতে থাকেন। কিন্তু বার বার নেতিবাচক খবর আসতে থাকে। জেনারেল মইন তখন দুই বিদেশি বন্ধুর (কূটনীতিক) কাছে জানতে চান, এমনটা হওয়ার কথা ছিল না!
আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা জিল্লুর রহমানকে সভাপতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। জেনারেল মইনের স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। তিনি তার আত্মীয়দের বলতে থাকেন যে এটি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ। কিন্তু জেনারেল মঈন হয়তো জানেন না, রাজনীতিতে সব সময়ই এমন হয়। জেনারেল তখন কী করবেন? স্বজনদের পরামর্শে তিনি বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। জায়গাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি বর্তমানে ফ্লোরিডা, হাসপাতাল এবং বাড়িতে তার দিন কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে দেশে চারটি কুশীলবের মধ্যে মাত্র একটির অবস্থা ভালো। জেনারেল মাসুদ জাতীয় পার্টির টিকিটে এমপি হয়েছেন। এখন তিনি বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত। জেনারেল আমিন মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে কর্মরত। ব্রিগেডিয়ার ব্যারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকে থাকার জন্য লড়াই করছেন। তবে জেনারেল মইনের সঙ্গে বিরোধের কারণে ব্রিগেডিয়ার ব্যারিকে অনেক আগেই দেশ ছাড়তে হয়।
মানুষ কতোইনা আশা করে কিন্তু সব আশা পূরণ হয় না। আশা পূরণ না হওয়ার পিছনে কিছু কারণও থাকে। তিনি বর্তমানে দেশের বাহিরে রয়েছেন বলে জানা যায়। আশা পূরণ না হলে তার একটি কষ্ট সারাজীবন মনের মধ্যে রয়ে যায়। ভাগ্য যডই সহায় না হয় তাহলে কারোরি কিছু করার থাকে না।