রাজনীতিবিদ স্বামী সংসদ সদস্য (এমপি), প্রভাব ও প্রতিপত্তি অর্জন করেছেন। অর্ধাঙ্গিনী মানুষ পিছিয়ে কেন? স্বামীর পাশাপাশি তারাও উন্নতি করেছে এবং ধনী হয়েছে। কেউ কেউ সম্পদে স্বামীকেও ছাড়িয়ে গেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া চট্টগ্রামের কয়েকজন সংসদ সদস্যের হলফনামায় বিষয়টি জানা গেছে।
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের অন্যতম আলোচিত এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের এই সংসদ সদস্য তার নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের জন্য বারবার গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন। প্রভাবশালী এবং মর্যাদাপূর্ণ হলেও তার স্ত্রী সম্পদে তাকে ছাড়িয়ে গেছে। হলফনামায় মোস্তাফিজুর রহমান তার স্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ২২ লাখ ১৪ হাজার ৭৩৩ টাকা। অন্যদিকে তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৬ লাখ টাকা।
হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মুস্তাফিজের বার্ষিক আয় ৩২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬৪ টাকা। তার স্ত্রীর বার্ষিক আয় ৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।
ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নাদভীরের আইআইইউসি থেকে বার্ষিক আয় ১ কোটি ৩৭ লাখ ৬১ হাজার ৪৪২ টাকা। তার স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরীরও বার্ষিক আয় ৪৪ লাখ ২২ হাজার ৪৪৬ টাকা। একই প্রতিষ্ঠান। হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নদভির কাছে ৯০ ভরি এবং তার স্ত্রীর কাছে ৫০ ভরি সোনা রয়েছে। নদভীর চেয়ে স্বর্ণ বেশি হলেও নগদ অর্থে এগিয়ে তার স্ত্রী। নদভীর কাছে নগদ রয়েছে ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৯৪১ টাকা, স্ত্রীর কাছে রয়েছে ২০ লাখ ২১ হাজার ২৪৬ টাকা। নদভীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১ কোটি ৬৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৪ টাকা এবং স্ত্রীর নামে রয়েছে ১৩ লাখ ৪১ হাজার ৯৫ টাকা। . নাদভীর ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে ২ কোটি ২৮ লাখ ৮৭ হাজার ২২০ টাকা এবং ডিপিএস (আমানত পেনশন স্কিম) ২ লাখ ৭২ হাজার ৯৯৪ টাকা। নদভীর স্ত্রী রিজিয়ার ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে ১৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭৬ টাকা এবং ডিপিএস ৭ লাখ ৯৮ টাকা। হাজার ৭৮।
হুইপ সুমশুল হক ও স্ত্রীর সম্পত্তি
হলফনামায় চট্টগ্রামের পটিয়া আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান হুইপ সামছুল হক নগদ অর্থ দেখিয়েছেন ২ লাখ ৫৩ হাজার ৬২৪ টাকা। তার স্ত্রীর নগদ অর্থ ২৮ লাখ ২৬ হাজার ৯৮৬ টাকা। অর্থাৎ হকের চেয়ে তার স্ত্রীর বেতন প্রায় ২৬ লাখ বেশি।
সামশুল হক বাসা বা অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বার্ষিক ভাড়া পান ১৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৪ টাকা। তার স্ত্রী পান ৪ লাখ ১৫ হাজার ৮০০ টাকা। সামশুল হক ব্যবসা থেকে আয় করেন ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর ব্যবসা থেকে আয় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে সুমশুল হকের বার্ষিক আয় ৭ লাখ ৯৬ হাজার ১০৮ টাকা। অন্যদিকে এই খাত থেকে তার স্ত্রীর বার্ষিক আয় প্রায় ২০ লাখ টাকা।
সামশুল হকের বার্ষিক আয় ১১ লাখ ৪ হাজার টাকা, অন্যান্য ভাতা ২৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৮৮ টাকা। তিনি অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে জমা টাকার পরিমাণ দেখিয়েছেন ৬১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এ খাতে স্ত্রীর অর্থের পরিমাণ ১০ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। স্টক এক্সচেঞ্জে বন্ড, ডিবেঞ্চার, শেয়ার রয়েছে ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর স্ত্রীর গণনা প্রপার্টিজ লিমিটেডের শেয়ার রয়েছে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের ১২ লাখ টাকা। সামশুল হকের ব্যাংকে বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রের ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা রয়েছে। এ খাতে তার স্ত্রীর টাকার পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি টাকা।
সামশুল হকের গাড়ির মধ্যে রয়েছে দুটি ল্যান্ড ক্রুজার। তিনি এ দুটির দাম দেখিয়েছেন ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সামশুল হক তার স্ত্রীর প্রায় ৪৭ লাখ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন। ভবন, বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টের মোট মূল্য প্রায় ৫১ লাখ টাকা, তার স্ত্রীর ৪৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।