Wednesday , November 13 2024
Breaking News
Home / Countrywide / রহিমা নিঁখোজ নাটকে কী হবে কারাগারে থাকা ব্যক্তিদের, ভিন্ন দাবী এক আসামির স্ত্রীর

রহিমা নিঁখোজ নাটকে কী হবে কারাগারে থাকা ব্যক্তিদের, ভিন্ন দাবী এক আসামির স্ত্রীর

অনেক নাটকীয়তা পার হওয়ার পর একমাসের কাছাকাছি সময় ধরে নিখোঁজ থাকা মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমকে শেষ পর্যন্ত সুস্থ এবং জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু পুরো ঘটনাই ছিল সাজানো, যেটা অনেকটা সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। কিছু ব্যক্তির উপর ক্ষোভ থেকেই এই নাটক সাজানো। নিখোঁজ হওয়া রহিমা বেগমের সন্তানেরা প্রকৃতপক্ষে প্রতিপক্ষকে হয়রানি এবং হেনস্থা করার জন্যই এমনটি করে, বলে জানা যায়। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য মামলা করেন রহিমা বেগমের মেয়ে।

এই মামলায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ ও জুয়েল এবং হেলাল শরীফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যারা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

রহিমা বেগমকে উদ্ধারের পর গ্রেফতা”রকৃতদের পরিবারের দাবি, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁ”সানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে আত্মগোপন করেন রহিমা। বিষয়টি তার মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ পরিবারের সদস্যরা জানতেন।

এ ঘটনায় গ্রেফ”তারকৃত রফিকুল আলম পলাশ ও নুরুল আলম জুয়েলের বাবা আনছার উদ্দিন আহমেদ রহিমার উদ্ধারের খবর পেয়ে দৌলতপুর থানায় ছুটে যান। তিনি জানান, তার ছোট ছেলে রফিকুল আলম পলাশ চাকরি করে এবং বড় ছেলে নুরুল আলম জুয়েল মুদি ব্যবসায়ী। রহিমার কথিত অপহ’রণের মামলায় তার দুই ছেলেকে জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তারা হয়রা”নির শিকার হয়।

তিনি বলেন, জমির সীমানা নিয়ে বিরোধের কারণে তাদের হয়”রানি ও মানহানি করা হয়েছে। রহিমা ও তার সন্তানরা কেন এই অপহরণের নাটক মঞ্চস্থ করেছে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে এ মামলায় গ্রেপ্তার ফুলবাড়ীগেটের ব্যবসায়ী হেলাল শরীফের স্ত্রী মনিরা আক্তার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমার স্বামী বিনা অপরাধে ২৮ দিন ধরে কারাগারে আছেন। আমার স্বামীকে ৩০শে আগস্ট গ্রে’ফতার করা হয় এবং আমার মেয়ের জন্ম ৬ই সেপ্টেম্বর। অক্টোবরে আমার বা”চ্চার ডেলিভারির তারিখ ছিল। কিন্তু আমার স্বামীকে গ্রেফতার করার পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং সিজারিয়ান অপারেশন করে আমার মেয়ের জন্ম দেই। এমন অবস্থায় আমি আমার স্বামীকে কাছে পাইনি। কোনো অপরাধ ছাড়াই আমাদের হয়রানি করা হয়েছে, জরিমানা করা হয়েছে, মানহানি করা হয়েছে, জেলে পাঠানো হয়েছে। আমরা নিশ্চিত ছিলাম যে আটককৃতদের কেউ ঘটনার সাথে জড়িত নয়। আমার স্বামী বের হলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। আমরা আশা করি আমার স্বামী শীঘ্রই মুক্তি পাবে।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও খুলনা জজ কোর্টের আইনজীবী ড. মাছুম বিল্লাহ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, রহিমা বেগম স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকায় তার নিখোঁজের ঘটনায় যারা কারাগারে আছেন তাদের কাউকে জড়িত থাকতে দেখা যাচ্ছে না। আসামিরা গু”মের সঙ্গে জড়িত তা এখনো প্রমাণিত হয়নি। মিথ্যা মামলা দায়ের করা দণ্ডবিধির ২১১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপ’রাধ।নির্দোষ প্রমাণিত হলে মিথ্যা অভিযোগকারী বা মামলা দায়েরকারীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলার বিধান রয়েছে। এছাড়া মিথ্যা অভিযোগকারী সকলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, রহিমা বেগম নিখোঁজের ঘটনায় যারা কারাগারে আছেন তারা যদি আইনি সহায়তা চান, তাহলে আমি কোনো বিনিময় ছাড়াই তাদের সহায়তা করব।

রহিমা বেগম গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে নিখোঁজ হন। এ সময় ওই বাড়িতে ছিলেন রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার। রহিমা বাসা থেকে পানি আনতে নামেন। দীর্ঘদিন পর তার সন্ধান না পাওয়ায় ঘটনার দিন সকাল আড়াইটায় তার মেয়ে আদুরী বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় অপহ’রণের মামলা করেন।

এরপর পুলিশ ও র‌্যাব ছয়জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মামলাটি দৌলতপুর থানা থেকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে ময়মনসিংহের ফুলপুরে পাওয়া অজ্ঞাতনামা এক নারীর নিথর দেহকে ‘নিজের মায়ের লাশ’ দাবি করলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে রহিমা বেগমের মেয়েরা। রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান উদ্ধারকৃত দেহের কাপড় দেখে প্রাথমিকভাবে জানান, এটি তার মায়ের দেহ। তবে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন উদ্ধারকৃত নারীর নিথর দেহের অর্ধ-পচা বলে দাবি করে সেটির ডিএনএ পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

রহিমা বেগম উদ্ধার হওয়ার পর এখন ঘটনাটি অনেকের নিকট হাসির খোরাক জুগিয়েছে। তবে পুলিশ ঘটনাটি প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল সে বিষয়ে খতিয়ে দেখছে। জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়ার পর মরিয়মের মা তেমন কোন কথা বলছেন না। এদিকে হয়রানির শিকার হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনেরা এই ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেবে বলে জানা গেছে।

About bisso Jit

Check Also

সব সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলো সাধারণ শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *