২০০৪ সালের আজকের এইদিনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে দলীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হতে না হতেই শুরু হয় একের পর এক গ্রেনেট হামলা। এ হামলায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও দলীয় অনেক নেতাকর্মীকে চোখের সামনে মৃত্যু হতে দেখেন শেখ হাসিনা।
তবে আওয়ামী লীগ সরকারে এসেও প্রতিশোধ নেয়নি উল্লেখ করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে আজ রোববার সকালে আয়োজিত আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেছেন, ২১ আগস্ট হামলার সময় কর্নেল রশিদ এবং ডালিম বাংলাদেশে ছিল; এই চক্রান্তের সঙ্গে। খালেদা জিয়া তাদের যেভাবেই হোক দেশ থেকে চলে যেতে সাহায্য করে।
তিনি আরও বলেন, তারা যে ঢাকায় ছিল সেটা অনেকেই জানে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, তাদের দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো এখানে মুক্তিযুদ্ধের নামে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। বিজয়ী হয়ে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা কি এত সহজ কাজ? কিন্তু তিনি করেছেন। মনে হচ্ছে সে অপরাধ করেছে। তার জন্য তাকে শেষ করা। এরপর বাংলাদেশকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়, সকল রাজাকার, আলবদর, স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমতায় আনা হয়, খুনিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়, পুরস্কৃত করা হয়। যেন আমরাই একমাত্র অপরাধী! কারণ আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছেন, বাংলাদেশ নামক দেশ দিয়েছেন, বাঙালি জাতি বলে আত্মপরিচয় দিয়েছেন। জাতি হিসেবে বাঙালি জাতি তার নিজস্ব পরিচয়ে বিশ্বে স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে। মনে হচ্ছিল সে যেন বড় অপরাধ করেছে। মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানো এবং তারপর এই হ”’ত্যা”।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আসার পর থেকে প্রতিটি পথে বাধা পেয়েছি। কতবার চোট এসেছে! যেখানেই গেছি সেখানে হামলা হয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা… সে সময় দেশের অবস্থা কী ছিল? আমরা ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। আমরা 96 সালে সরকার গঠন করেছি। সরকার গঠন করে আমি দেশের জন্য কাজ করেছি- বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, রাস্তাঘাট নির্মাণ, সারা বাংলাদেশে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, বিভিন্ন নদীর উপর সেতু থেকে শুরু করে দেশকে তৈরি করা।, দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা। কোনটা না আমরা করেছি! জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য জাতির পিতার আদর্শ-স্বপ্নকে অনুসরণ করে দীর্ঘ ৩৫ বছর দেশ পরিচালনা করেছি। বাংলাদেশ তখন এগিয়ে যাচ্ছিল। বাংলাদেশের মানুষ সরকারি সেবা পাচ্ছিল।
তবে পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসলেও আওয়ামী লীগ সরকার কিন্তু এ হামলার প্রতিশোধ নেয়নি। বিরোধীদল (বিএনপি) সেদিন যেভাবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছিল, ক্ষমতায় শেখ হাসিনা চাইলেই এর প্রতিশোধ নিতে পারতেন। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনা করে তিনি সেটা করেননি।