ময়মনসিংহ, খুলনা এবং চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশের পর এবার রংপুরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। আগামী ২৯ অক্টোবর বিএনপি’র ঘোষণা অনুযায়ী রংপুর বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই সমাবেশ উপলক্ষে বিএনপি নেতাকর্মীদের সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতারা। সমাবেশকে সফল করার জন্য ইতিমধ্যে সমাবেশস্থলে রওনা দিয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হতে পারে এমন বিষয়টি মাথায় রেখেই তারা আগেভাগেই সমাবেশস্থলে পৌঁছেছেন।
মোস্তাফিজুর রহমান (৪৬) ও রহিদুল ইসলাম (৪০) লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের আজিজপুর গ্রাম থেকে সমাবেশস্থলে এসেছেন। বুধবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পাটগ্রাম থেকে ট্রেনে করে রংপুর স্টেশনে পৌঁছান তারা। স্টেশনে রাত কাটিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে তারা সমাবেশস্থলে আসেন।
মোস্তাফিজুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বাস বন্ধের ভয়ে কয়েকশো কিলোমিটার দূর থেকে তিন দিন আগে রংপুরে এসেছেন। তার সঙ্গে প্রতিবেশী রহিদুলও এসেছেন।
তিনি আরও বলেন, স্টেশনে রাত কাটিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে সমাবেশস্থলে পৌঁছান তিনি। একটা কম্বলও নিয়ে এসেছেন। ২৯ অক্টোবর সমাবেশ শেষে তিনি বাড়ি ফিরবেন।
রহিদুল বলেন, চিড়া-মুড়ি খেয়ে হলেও থাকবো। রাতে মঞ্চের চারপাশে কম্বল বিছিয়ে ঘুমাবো। তিনি আরও বলেন, তাদের সহযোগীরা ইতিমধ্যে বাড়ি ছেড়েছে।
এদিকে মোস্তাফিজুর ও রহিদুলের মতো এনামুল হকও বুধবার রাতেই গাইবান্ধার ফুলছড়ি থেকে আসেন। বৃহস্পতিবার সকালে সভাস্থলে তার সঙ্গে কথা হয়। এনামুল জানান, বুধবার রাতে তিনি ফুলছড়ি থেকে রংপুরে আসেন। সমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি রংপুরে অবস্থান করবেন।
এদিকে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষনা আসতে পারে। আজ সন্ধ্যায় পরিবহন মালিক সমিতির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, ধারনা করা হচ্ছে ধর্মঘট করা হবে। তাই ভয়ে রয়েছেন নেতারা। এ প্রসঙ্গে রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান শামু বলেন, এখন পর্যন্ত ধর্মঘট নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জেনেছি। তবে সম্ভবনা রয়েছে মনে করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের আটক বা গ্রেফতার না করলেও সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা নেতাকর্মীদের খোঁজ করছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা থেকে রংপুরে পৌঁছেছেন রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশের দলনেতা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ। সমাবেশস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর তারা ঢাকায় খেলবেন। আমরা খেলা দেখছি। আমরাও ২৯ অক্টোবর রংপুরে খেলব। এদিন স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। যার মাধ্যমে প্রমাণ হবে সারাদেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে আছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দলীয় নেতা-কর্মীদের খুঁজছে অভিযোগ করে হারুন অর রশিদ বলেন, কোনো ধরনের হয়রানি বা ষড়যন্ত্র করে এই সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। ধর্মঘটের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করতে পরিবহন মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
২৯ শে অক্টোবর রংপুরের সমাবেশ সফল করার জন্য ইতিমধ্যে রংপুর বিভাগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতি বৈঠক করছে। সমাবেশে বিপুল পরিমান গন সমাবেশ ঘটানোর লক্ষ্যে নেতাকর্মীরা প্রচারপত্র বিলি করছেন এবং বিভিন্ন স্থানে ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়ে প্রচার করছেন। সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে রংপুরে ইতিহাসখ্যাত কালেক্টরেট মাঠে।