রংপুর নগরীতে ভাড়া বাসায় অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ ৩ জনকে আটক করেছে মহানগর কোতয়ালী থানা পুলিশ।
নীলফামারীর চাঁদখানা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল বারেককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া যশোরের বিপাশা খাতুন ও দিনাজপুরের সাদিয়া আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরপিএমপির কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোতাসিম বিল্লাহ জানান, রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন মহল্লায় ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে দেহ ব্যবসা করে আসছিল। বিষয়টি আমরা অনুসন্ধানে রেখেছিলাম। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে এমন সংবাদ পেয়ে নগরীর সরদারপাড়া মহল্লায় অভিযান চালাই। সেখানে মোফাখলারুল ইসলামের বাসা ভাড়া নিয়ে বিনা রানী নামে এক নারী অসামাজিক ব্যবসা করে আসছিল।
তিনি আরও বলেন, সেখানে অভিযান চালিয়ে ভাড়াটিয়া বীনা রানীর ফ্ল্যাট থেকে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করি। তাদের নামে মামলা রুজু করে আদালতের মাধ্যমে মঙ্গলবার বিকেলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল জানান, বীনা রানী নামের একজন রণচন্ড্রিতে আছেন আওয়ামী লীগ সমর্থন করেন। তিনি উপজেলা নির্বাচনে সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে তিনি বা তার বাসায় কোনো অসামাজিক কাজ হয় কিনা সেটি আমার জানা নেই।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রশিদুল আলম বাবু জানান, আব্দুল বারেক চাঁদখানা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছিলেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাই তার কোনো কাজের জন্য স্বেচ্ছাসেবক লীগ দায়ী থাকবে না।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, বীণা রানী নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের রণচণ্ডী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি রংপুরের বাঁধন জেনারেল হাসপাতালের পরিচালকও। তার বিরুদ্ধে ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে নারী-পুরুষের বিবাহবহির্ভূত অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে ঘটনার সময় তাকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা টের পেয়ে তাদের আটকের সময় তিনি সটকে পড়েন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীতে অনেক ভাড়া ও নিজস্ব বাড়িতে এ ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপের তথ্য রয়েছে তাদের কাছে। বিভিন্ন পেশার আড়ালে তারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে আসছে। অনেক ক্ষেত্রে এসব বাড়ির গ্রাহকরা সমাজের প্রভাবশালী ও পেশাজীবী মানুষ। ব্যবসায়ীরাও এসব লোকের প্রভাব ও ক্ষমতা ব্যবহার করছেন।