দিনাজপুরের বিরলে স্ত্রী রেশমা খাতুনের হাত-পা বেঁধে মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে যৌতুক লোভী স্বামী। শনিবার রাতে উপজেলার ১০নং রানী পুকুর ইউপির কাজীপাড়া বিলাই মাড়ি গ্রামে এ বর্বরোচিত নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। বিয়ের পরে আট বছর পরে এক সন্তান থাকা সত্ত্বেও স্ত্রী সাথে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন স্থানীয় পর্যায়ে।
দিনাজপুরে যৌতুক না দেয়ায় স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে অমানুষিক নির্যাতন চালানোর ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৬ আগস্ট) দিবাগত রাতে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ১০ নম্বর রানীপুকুর ইউপির কাজীপাড়া বিলাইমারী গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। স্বামীর বর্বরোচিত নির্যাতনের শিকার এক সন্তানের মা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আট বছর আগে গাইবান্ধা জেলার প্রয়াত আসমত আলীর মেয়ের সঙ্গে কাজিপাড়া বিলাইমারী গ্রামের হাসেম আলীর ছেলে মজিবর রহমানের (৩৫) বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মজিবর যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন।
নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রথম পর্যায়ে বাবার পরিবারের কাছ থেকে এক লাখ টাকা যৌতুক এনে দেন ওই নারী। এরই মধ্যে তাদের সংসারে ১টি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। কন্যাসন্তানের বর্তমান বয়স ছয় বছর। কিছু দিন সংসারে সুখ-শান্তি থাকলেও যৌতুক লোভী স্বামী মজিবর যৌতুকের জন্য আবারও অত্যাচার করতে থাকেন। একপর্যায়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ি চলে যান। দীর্ঘদিন বাবার বাড়ি থাকার পর কয়েক দিন আগে স্বামীর বাড়িতে আসেন। কয়েক দিন ভালোভাবে কাটলেও শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে মজিবর আরও এক লাখ টাকার জন্য স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালান।
নির্যাতিত গৃহবধূ বলেন, ‘শনিবার দিবাগত রাত ১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে আমার ওপর নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে আমার হাত-পা ও মুখে কাপড় বেঁধে মাথা ন্যাড়া করে দেয়।’ সকালের দিকে গ্রামের লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে গৃহবধূকে উদ্ধার করে বিরল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল মোকাদ্দেস বলেন, ‘ওই গৃহবধূ নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার সুষ্ঠ চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। হাসপাতালে ভিকটিমকে দেখে আসা হয়েছে। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে মজিবরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, স্থানীয় এবং প্রতক্ষ্যদর্শীদের বর্ননা মতে জানা গেছে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বালাসীঘাট মধ্য বাগুড়িয়া গ্রামের প্রয়াত আছমত আলীর মেয়ে রেশমা খাতুন এর বিয়ে হয় রানী পুকুর নং কাজীপাড়া বিলাই মাড়ি গ্রামের হাসিম আলীর যৌতুক লোভী ছেলে মজিবুর রহমানের সাথে। বিরল উপজেলার ১০, প্রায় ৮ বছর আগে এই বিয়ে হয়। তাদের ৬ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে।