দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি নাটকীয় নির্বাচন এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকদের চোখে ছানি পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বগুড়া-৪ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হিরো আলম।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভোট বর্জনের কাগজ জমা দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।
হিরো আলম বলেন, ‘গতকালের নির্বাচন নাটকীয় নির্বাচন। আমিও ভোট দিতে চাইনি। এ আসনে প্রতিবারই আমার সঙ্গে দুর্নীতি হয়েছে। আমি আগে থেকেই জানতাম সে এবার এটা করবে। দেশবাসীর কাছে তা প্রমাণ করতে নির্বাচনী মাঠে ছিলাম। আমি চাইলে গতকাল সকালে বয়কট করতে পারতাম কিন্তু আমি করিনি। কারণ শেষ পর্যন্ত মাঠে কী হয় তা আপনি দেখতে পাচ্ছেন; আওয়ামী লীগের ভোট সুষ্ঠু না জাল? বিদেশি পর্যবেক্ষকরা কোথা থেকে দেখবেন? তাদের ছানি আছে। তারা দেখতে পারে না।
তিনি বলেন, “আমরা সারাদিন নির্বাচনী মাঠে ঘুরেছি। আমার এজেন্টরা বলেছে, তাদের বলা হয়েছে, আলম যদি কেন্দ্রে আসেন, তাহলে তাকে বলতে হবে যে ভোট ভালো হচ্ছে। কিন্তু আমরা চলে যাওয়ার পর তারা দুপুরের খাবারের সময় সিল মেরেছে। এছাড়া তারা কিছু সিল নিয়ে এসেছে।আমরা যখন কেন্দ্রে যাই তখন প্রতিটি কেন্দ্রে দুই লাখ ১৫ হাজার ৯৬টি ভোট ছিল।
হিরো আলম বলেন, ‘আমি এবার ২৪ হাজার ৬০০ ভোট পেয়েছি। কিন্তু আমার ভোট দেখানো হয়েছে মাত্র ২ হাজার ১০০। আমি প্রথম যখন সেখানে যাই তখন নৌকা ছিল ছয় হাজারের মতো ভোট। কিন্তু পরে নৌকায় সিল মেরে ভোট দেন ২৫ হাজার। ঈগল মার্কা পেয়েছেন প্রায় ১০ হাজার ভোট। যারা আমার এজেন্ট ছিল তারা আমাকে এসব বলেছে।
বাংলাদেশ কংগ্রেসের এই প্রার্থী বলেন, ‘জিয়াউল হকের এত ভোট পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। যেখানে বিএনপি ভোট দিতে যায়নি সেখানে তিনি এত ভোট পেলেন কী করে?’
অভিযোগ করে তিনি বলেন, প্রিজাইডিং অফিসাররা কেন্দ্র থেকে ফলাফল ঘোষণার আগেই আওয়ামী লীগের লোকজন তাদের গণনাকৃত ফলাফলের শিট ছিঁড়ে ফেলে এবং তাদের তৈরি করা ফলাফলের শিট তুলে দিয়ে ফলাফল ঘোষণার নির্দেশ দেন। এভাবে প্রতিটি কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে। তাই এই ফলাফল আমি মানি না। আর এই নির্বাচন দিয়ে সরকার জনগণের সাথে কতটা প্রতারণা করেছে তা আপনারা নিজেরাই দেখেছেন।
এর আগে রোববার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান হিরো আলম। তিনি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসন থেকে বাংলাদেশ কংগ্রেসের হয়ে ‘ডব’ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেন।