কর্মচারীর গ্রামে বেড়াতে বাংলাদেশে এসেছেন সৌদি আরবের নাগরিক আবু নাসের (৬০)। আট দিনের সফরে গত বুধবার তিনি বাংলাদেশে আসেন।
দেলোয়ার হোসেন (৩০) ও মনির হোসেন (২৭) দুই ভাই ময়মনসিংহের ত্রিশালের বাসিন্দা। মনির ছয় বছর আগে সৌদি আরবে যান তার বড় ভাই দেলোয়ার চার বছর আগে। তারা সৌদি আরবের জেদ্দায় আবু নাসের ও তার আরেক ভাইয়ের বাড়ির দেখাশোনা করত। সেখানে কাজ করার সময় দুই ভাই মালিকদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে।
সেই ভালোবাসার কারণে গত বুধবার আট দিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন আবু নাসের। তবে দেলোয়ার ও মনির এখন সৌদি আরবে রয়েছেন। আবু নাসের দেশে এলে বিমানবন্দর থেকে দেলোয়ারের স্বজনরা তাকে স্বাগত জানান। পরে ত্রিশালের মঠবাড়ি ইউনিয়নের মঠবাড়ি গ্রামে নিয়ে আসা হয়।
আবু নাসেরকে বর্শা দিয়ে পুকুর থেকে মাছ ধরতে দেখা যায়। জাল দিয়ে পুকুর থেকে মাছ ধরা দেখছেন। গ্রামীণ পরিবেশে গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালন দেখে তিনি খুবই খুশি। তিনি ঘুরে ঘুরে স্থানীয় বাজার থেকে বিভিন্ন সবজি কিনে আনেন। প্রবাসী দেলোয়ারের চাচা আবদুস সাত্তার তার সঙ্গে আরবি ভাষায় কথা বলেন। অন্য কারো সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও সহযোগিতা করছেন আবদুস সাত্তার।
সৌদি নাগরিক আবু নাসের বলেন, “দেলাওয়ার এবং মনির আমাদের প্রতি খুব আস্থাশীল। আমি তাদের খুব ভালোবাসি। তাদের দীর্ঘ কাজের অভিজ্ঞতার কারণে তাদের সততা এবং দক্ষতার কারণে আমরা তাদের বিশ্বাস করি। আমি আসতে পেরে খুব খুশি বোধ করছি। তাদের ভালোবাসার কারণে এখানে। তাদের পরিবারের সদস্যরা খুব ভালো। সৌদিতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের কর্মকাণ্ড খুবই ভালো। তারা খুবই পরিচ্ছন্ন।’
আবু নাসের আরো বলেন, আমরা তাদের নিজেদের পরিবারের সদস্য মনে করি। নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসি। তারাও আমাদের ভালোবাসে। আমি এখানে যা দেখি, সবাই কাজ করে। আছে মুরগির খামার, খামার। তারা নিজেরাই মাছ চাষ করে। তরকারি খেতে হোটেলে যেতে হবে না। এবং এর জন্য আমাদের অন্যদের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমি এই জিনিসগুলি সম্পর্কে খুব ভাল অনুভব করছি, আমি সেগুলি উপভোগ করছি।
প্রবাসী দেলোয়ারের বাবা মিন্টু মিয়া বলেন, “আমার দুই ছেলে তাদের কাজের সুবাদে অজপাড়াগাঁয়ে গরীব বাড়িতে যাবে, তা কখনো কল্পনাও করিনি। আমি খুব ভালো, গর্বিত বোধ করছি। তার মতো একজন মানুষ আজ আমাদের বাড়িতে সততার সাথে বসবাস করছে, আমার ছেলেদের প্রতি আন্তরিকতা ও ভালোবাসা।তিনি আমাদের সাথে আট দিন থাকবেন।আমরা চেষ্টা করছি, যেন তিনি বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে ভালো ধারণা নিতে পারেন।তাদের সাথে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক আরও মজবুত হোক।’
সৌদি প্রবাসী দেলোয়ার মুঠোফোনে বলেন, মালিক ও আমি একসঙ্গে কোথাও যাওয়ার সুযোগ পাই না। তাই তিনি একাই গত ৬ সেপ্টেম্বর আমাদের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান। আমার পরিবারের সদস্যরা তাকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তুলে নেয়। আশা করি, তিনি আমাদের গ্রাম ও গ্রামীণ পরিবেশ দেখতে পছন্দ করবেন। এটি আমাদের নিয়োগকর্তা-কর্মচারী সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে। ১৪ সেপ্টেম্বর তার সৌদি আরবে ফেরার কথা রয়েছে।