ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরবর্তীতে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন-৬ এর কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে উপস্থিত করলে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
গ্রেফতারকালে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক জানান, একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, গ্রেফতারের সময় চিন্ময় দাস শান্ত ছিলেন এবং ডিবি কর্মকর্তাদের সাথে কোনো বিরোধ করেননি।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে একটি সমাবেশে অংশ নেন। এই সমাবেশের পর, ৩১ অক্টোবর, তাকে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি বিএনপি নেতা ফিরোজ খান দায়ের করলেও পরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় আসামিদের মধ্যে ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত, ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাশ ব্রহ্মচারী, এবং আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি রয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান ঘটার পর, নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্টে একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে লালদীঘির মাঠে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বেশ কিছু আসামির সহায়তায় ইসকনের গেরুয়া পতাকা জাতীয় পতাকার পাশে উত্তোলন করা হয়, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
গ্রেফতারের পর ইসকন প্রবর্তক ধাম অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের এক ভিডিও বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, যেখানে তিনি মামলাটিকে সনাতনীদের আট দফা দাবির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর সনাতনীদের ওপর চালানো হামলা-নির্যাতনের প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন। এই আন্দোলন বর্তমান সরকার বা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়।”
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’ নামে নতুন একটি জোটের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।