সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বর্তমানে কলকাতার দমদম এলাকায় অবস্থান করছেন। একইসঙ্গে সেখানে আছেন সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে পাড়ি জমিয়ে তারা বর্তমানে কলকাতার একটি অভিজাত আবাসিক এলাকায় আছেন বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে কালের কণ্ঠ একটি ভিডিওসহ তাদের অবস্থানের তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গত ৪ আগস্ট রাতে আ ক ম মোজাম্মেল হক বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে কলকাতায় যান। প্রথমে তিনি এক পরিচিত ব্যক্তির বাড়িতে ওঠেন। পরে, গত ১ নভেম্বর তিনি দমদম এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেন। হোটেলে উঠার আগে তার সঙ্গে দেখা হয় গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের। দুইজনের দীর্ঘদিনের বিরোধের অবসান ঘটে সেদিন। এর পরপরই জাহাঙ্গীর আলমের তত্ত্বাবধানে মোজাম্মেল হক ওই হোটেলে অবস্থান করতে শুরু করেন।
এদিকে, দমদম এলাকায় অন্য আরেকটি হোটেলে অবস্থান করছেন সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং তার চাচা মতিউর রহমান মতি। জানা গেছে, দমদম রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এই এলাকায় অবস্থানরত সাবেক এই নেতারা নিয়মিত দেশের বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আ ক ম মোজাম্মেল হক একটি হোটেলের কক্ষে নরম বিছানায় শুয়ে টিভি দেখছেন। টিভির রিমোট তার হাতে ধরা। তিনি বাংলাদেশের খবরাখবর দেখেই সময় কাটাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ভিডিওতে তাকে আরামে সময় কাটাতে দেখা যায়।
২০১৮ সালে গাজীপুর সিটির মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মোজাম্মেল হক এবং জাহাঙ্গীর আলমের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হন জাহাঙ্গীর আলম। পরে ২০২৩ সালের গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি তার মা জায়েদা খাতুনকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করান এবং বিজয়ী করেন। তবে বর্তমানে কলকাতায় তাদের একসঙ্গে দেখা যাওয়ায় বোঝা যাচ্ছে, তারা পূর্বের সব বিরোধ মিটিয়ে নতুন এক সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছেন।
জাহাঙ্গীর আলমের ব্যক্তিগত ফটোগ্রাফার ইমন খান তার ফেসবুকে এক পোস্টে বিষয়টি ইঙ্গিত করেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, “দেশে থাকা অবস্থায় যার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছেন, ভারতে গিয়ে তার কাছেই আশ্রয় নিলেন।” এটি ইঙ্গিত দেয়, মোজাম্মেল হক এবং জাহাঙ্গীর আলমের সম্পর্কের নতুন দিক খুলে যাচ্ছে।
তাদের কলকাতায় অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বিশেষত, দমদম এলাকায় তাদের অবস্থান এবং দেশের সঙ্গে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ ভবিষ্যতের রাজনীতির জন্য বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।