ফ্রান্সের এশিয়া-প্যাসিফিক কৌশলকে “শক্তিশালী ও মজবুত” করতে সোমবার বাংলাদেশ সফরে আসেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এছাড়া তার সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে এই অঞ্চলে চীন তার প্রভাব বৃদ্ধি করে যে ‘নতুন সাম্রাজ্যবাদ’ ছড়াতে চাইছে তা প্রতিরোধ করা।
ম্যাক্রোঁ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছেন, নতুন সাম্রাজ্যবাদের মুখোমুখি এই অঞ্চলে গণতান্ত্রিক নীতি এবং আইনের শাসনের উপর ভিত্তি করে আমরা একটি তৃতীয় ‘উপায়’ প্রস্তাব করতে চাই। আমাদের অংশীদারদের কঠিন ভাষায় কথা শোনানোর কিংবা তাদের একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন বিস্তৃত অঞ্চলে প্রভাবের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এবং ম্যাক্রোঁ মূলত ফ্রান্সকে তৃতীয় বিকল্প হিসাবে উপস্থাপন করেছেন। প্রতিবেশী ভারতে জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলন শেষে রোববার রাজধানী ঢাকায় আসেন ম্যাক্রোঁ। এখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ধীরে ধীরে বিশ্ব মঞ্চে তার স্থান ফিরে পেয়েছে। তিনি বাংলাদেশের প্রশংসা করেন এবং দেশটিকে দক্ষিণ এশিয়ায় ‘অভূতপূর্ব সাফল্য’ হিসেবে অভিহিত করেন। বাংলাদেশ একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি এবং ১৭ কোটিরও বেশি জনসংখ্যা নিয়ে বিশ্বের ৮ম জনবহুল দেশ এটি।
সোমবার, ম্যাক্রোঁ এবং শেখ হাসিনা ইউরোপীয় বিমান নির্মাতা এয়ারবাস থেকে 10 A350 কেনার একটি ‘প্রতিশ্রুতি’ নিয়ে আলোচনা করেন। এই চুক্তির আকার হতে পারে ৩.২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ বিমান সবসময়ই মার্কিন কোম্পানি বোয়িং থেকে উড়োজাহাজ কিনতো। ম্যাক্রোঁ সাংবাদিকদের বলেন, এয়ারবাসের কাছ থেকে বাংলাদেশের বিমান কেনার এই সম্ভাবনা ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়’।
ম্যাক্রোঁ সোমবার শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করেন এবং বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করেন।
শেখ হাসিনা সোমবার বলেন, আমরা উভয়েই আশা করি বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে এই নতুন কৌশলগত পদক্ষেপ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এর আগে জুলাই মাসে ম্যাক্রোঁ নিউ ক্যালেডোনিয়া, ভানুয়াতু এবং পাপুয়া নিউ গিনি সফর করেন। রবিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। গত জুলাইয়ে ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে প্যারিস যান মোদি। গত ছয় মাসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে যতখানি অগ্রসর হয়েছেন, যা এর আগের এক দশকেও দেখা যায়নি।