বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের নাগরিকেরা একের পর এক প্রশংসা অর্জন করছেন এবং সেইসাথে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছেন। পৃথিবীর অন্যতম উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ বসবাস করছেন। এবার সেখানে মানব পাচারের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পুনর্বাসন এবং সহায়তার স্বীকৃতি হিসেবে ‘হিরো’ খেতাব পেলেন বাংলাদেশি নাগরিক মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম।
মানব পাচার রোধ এবং পাচারের শি’কার ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে ভূমিকার জন্য বাংলাদেশি নাগরিক মোহাম্মদ তরিকুল ইসলামকে যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি দিয়েছে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক প্রকাশিত ২০২২ সালের ‘ট্রাফিকিং ইন পারসনস (টিআইপি)’ রিপোর্টে তাকে ‘টিআইপি রিপোর্ট হিরো’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল।
প্রতি বছর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানব পাচার প্রতিরোধে এবং ভুক্তভোগী বা ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা করার জন্য তাদের প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ মানব পাচার প্রতিবেদনে কয়েকজনকে ‘হিরো’ হিসাবে নাম ঘোষনা করে থাকে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এ বছরের তালিকায় তরিকুলসহ মোট ৬ জনের নাম স্থান পেয়েছে।
২০১৭ সাল থেকে, তরিকুল যুক্তরাজ্য ভিত্তিক এনজিও ‘জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার’-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন, যা মানব পা”চার প্রতিরোধে কাজ করে।
তার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের অধিকারের জন্য বিরামহীন কণ্ঠস্বর হিসেবে তরিকুল ইসলামের ভূমিকা বাংলাদেশ সরকারকে পাচারকারীদের তদন্ত ও বিচারের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরিকুল তার সংস্থার নেতৃত্বে দুই হাজারেরও বেশি পা’চারের শিকারকে সহায়তা করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরিকুল মানব পাচারের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জনে সরকারকে সহায়তা করেছেন। তার কাজের মধ্যে ২০২১ সালের মানব পাচার রিপোর্টের সুপারিশ বাস্তবায়নও অন্তর্ভুক্ত। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, তরিকুল পাচারের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত উদ্যোগ গ্রহণে ভূমিকা রেখেছিল।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন-এর কাছ থেকে ‘টিপ রিপোর্ট হিরো’ পুরস্কার গ্রহণের সময় তরিকুল বলেন, ”মানব পাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের স্বীকৃতি পাওয়া এই ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর অংশ হওয়া আমাদের প্রত্যেকের জন্য সম্মানের। তবে আমি জানি, আসল হিরো তারাই যারা পাচার হয়ে বেঁচে ফিরেছেন।’
উল্লেখ্য, বর্তমান সময়ে প্রায় প্রত্যেক দেশে মানবপাচার একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেটা আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অসাধু গোষ্ঠীরা করে থাকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিপাকে পড়ে পাচার হওয়া ব্যক্তিরা, যার কারণে অনেকের জীবন ধ্বং”সের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে দাঁড়ায়। এই পাচার রোধ এবং পাচার হওয়া ব্যক্তিরা যাতে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পায় সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেছেন এই বাংলাদেশি যুবক।