বাংলাদেশ থেকে অনেকেই বিদেশের মাটিতে যেয়ে বহুদিন ধরে বসবাস করছেন। সেখানে যেয়ে তারা অর্জন করেছেন সেই দেশের নাগরিকত্ব। এই বিষয়টি আসলেই খুব গর্বের একটি বিষয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেয়ে তারা সেই দেশের কালচারের সাথে খাপখাইয়ে নিচ্ছে তারা। সম্প্রতি তেমনি একটি সুংবাদ শোনা গেল। সুসংবাদটি হলো যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের নাগরিক মোহাম্মাদ তারিকুল ইসলাম এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাফিকিং ইন পার্সন (টিআইপি) হিরো হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
বাংলাদেশের নাগরিক মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম এ বছর ইউএস ট্রাফিকিং ইন পারসন্স (টিআইপি) হিরো হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। এ বছর ছয়জনকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ জুন) ট্রাফিকিং ইন পার্সন রিপোর্ট লঞ্চ অনুষ্ঠানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন তরিকুলকে এই পুরস্কার প্রদান করেন।
দেশে মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের সহায়তা করা এবং মানব পাচারের তদন্ত ও বিচারে সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য তরিকুলকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তিনি প্রধান ভূমিকা পালন করেন। এই প্রথম একজন বাংলাদেশী ইউএস ট্রাফিকিং ইন পারসন্স (টিআইপি) হিরো হিসেবে স্বীকৃতি পেলেন।
ছয় নায়কের পক্ষে তরিকুল তার বক্তব্যে বলেন, আজ বীরাঙ্গনাদের পক্ষে কথা বলা অনেক সম্মানের। কিন্তু প্রকৃত হিরো তারাই যারা মানব পাচার থেকে বেঁচে যায়।
সিরমো ফারাহ, যিনি গ্রেট ব্রিটেনের হয়ে চারটি অলিম্পিক স্বর্ণপদক জিতেছিলেন, তিনি মানব পাচারের শিকার হয়েছিলেন এবং অবশেষে ফিরে এসেছিলেন। তিনি বলেন, তার গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমরা বিশ্বের যেখানেই থাকি না কেন, মানব পাচারের লক্ষণ সর্বত্রই রয়েছে। এটি প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের যথাসাধ্য করতে হবে।
জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার সংস্থায় কর্মরত তরিকুল বলেন, আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি ট্রাফিকিং ইন পার্সন রিপোর্টের গুরুত্ব। প্রতিবেদনটি সরকারকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ন্যায়বিচার এবং যত্নের মতো সংস্থাগুলির সাথে কাজ করার জন্য একটি নির্দেশনা প্রদান করে।
তিনি বলেন, মানব পাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশে কঠোর আইন করা হয়েছে, জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং মানব পাচারের মামলা পরিচালনার জন্য পৃথক ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। এ কারণে মানব পাচারের শিকারদের জীবনে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা বাংলাদেশে উদ্ধার হওয়া শতাধিক মানুষের সাথে কাজ করি এবং তারা যখন নতুন জীবন শুরু করে তখন আমরা খুশি।” আরো মানুষের সেবা করতে অনুপ্রাণিত বোধ.
পাচার হওয়া এক নারীর জীবন কাহিনী বর্ণনা করে তরিকুল বলেন, যখন তাকে উদ্ধার করা হয়, তখন সে খুবই বিষণ্ণ ছিল এবং আত্মহত্যার চিন্তা ছিল। আমরা তাকে সাহায্য করি। এখন সে একজন সফল ব্যবসায়ী, তার নিজের পরিবার আছে এবং মানব পাচারের শিকার অন্যদের সাহায্য করে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে এত বড় একটি বিরল স্বীকৃতি পেয়ে তিনি বাংলার মুখ সীমাহীনভাবে উজ্জল করেছেন। মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম হলেন বাংলাদেশের গর্ব। এভাবে বাংলার মানুষ বিশ্বের দেশগুলোতে যেয়ে এরকম নজীর স্থাপন করবেন এমনটাই আশা সবার।