বাংলাদেশে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দিল্লির জবাবে ঢাকা খুশি হলেও এতে করে বিএনপি হতাশ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দিল্লি যেভাবে ঢাকার পাশে দাঁড়িয়েছে তাতে খুশি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকের পর দিল্লির প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা বলেছেন, ‘ভারত যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে জবাব দিয়েছে তা এবার ওয়াশিংটনের আচরণে প্রভাব ফেলবে বলে আমরা মনে করি। ‘
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারতের অনড় অবস্থানে হতাশ বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো।
এই বৈঠকের আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন নেতা ভারতীয় কূটনীতিকদের কাছে তার বার্তা পৌঁছে দিতে দিল্লি সফর করেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সরাসরি বক্তব্যই তার প্রমাণ।
প্রতিবেদনে আত্মগোপনে থাকা বিএনপির এক নেতার বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকে এই আচরণ কাম্য ছিল না। অবৈধ সরকারের পাশে দাঁড়ানোয় তারা বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে আরও দূরে সরে যাবেন। ‘
ওই বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা এক সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্টভাবে বলেছেন, নির্বাচনের বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে অতিসক্রিয়তা দেখাচ্ছে এবং নির্বাচন সংক্রান্ত ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে তাতে সেদেশে আত”ঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিপন্থী।
তিনি বলেন, নতুন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে মৌলবাদী শক্তি আবার জেগে উঠতে পারে এবং দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
কোয়াত্রা বলেন, ‘ভারতও চায় বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হোক। কিন্তু আমাদের অবস্থান সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে। এমনটাই জানানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে। ‘
বৈঠকের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর থেকে এক প্রেস বিবৃতি জারি করা হয়। এতে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করা আন্তর্জাতিক বিষয়ের বিবরণ রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একটি কথাও বলা হয়নি।
আওয়ামী লীগের এক প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভাষায়, ‘আমাদের আশা বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী দেশ ভারতের এই মনোভাবকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নাক গলানো বন্ধ না হলেও কমবে তাতে। প্রকৃত বন্ধুর মতো আবার পাশে দাঁড়াল দিল্লি। ‘
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্ব হরতাল-অবরোধ ডাকার পর অনেক জায়গায় বাস ও যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। ওইসব না”শকতা মামলায় বিএনপির অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ নেতা আবার কারাগারে। কয়েকজন লুকিয়ে আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার আগে বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু দিল্লিতে গিয়ে ভারতীয় কূটনীতিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু স্থায়ী কমিটির এই নেতার সফর ফলপ্রসূ না হওয়ায় যথেষ্ট হতাশ বিএনপি। বিপরীতে, বিএনপি নেতৃত্ব শনিবার একটি বিবৃতি দিয়ে সাবেক মিত্র জামায়াত-ই-ইসলামী সম্পর্কে দিল্লিতে গণমাধ্যমে যে মন্তব্য করেছিলেন তা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন।