Wednesday , December 25 2024
Breaking News
Home / National / যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা: গোপনে খোঁজখবর রাখছেন প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা: গোপনে খোঁজখবর রাখছেন প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশাসনের হৃদয়ে চলছে নানা আলোচনা। নিজেদের মধ্যে এসব আলোচনায় কে এই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে যাচ্ছেন তা জানতে আগ্রহী সবাই। কেউ প্রকাশ্যে কিছু না বললেও প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সেদিকে নজর রাখছেন। তবে বেশির ভাগ কর্মকর্তাই এ নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন। সচিবালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র গত ২২ সেপ্টেম্বর ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা শুরু করে। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিষিদ্ধ ব্যক্তিদের তালিকা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে যারা ভিসা নীতির আওতায় ভিসা নিষেধাজ্ঞার শিকার হবেন তাদের নাম প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। কারণ যে কোনো ভিসা রেকর্ড, যার মধ্যে কাউকে জারি করা হয়নি, মার্কিন আইনের অধীনে গোপন তথ্য।

এরপর থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে তালিকায় কারা আছেন তা জানার চেষ্টা করছেন একাধিক কর্মকর্তা। এ বিষয়ে নতুন কোনো খবর আছে কিনা তা জানতে অনেকেরই আগ্রহ। একাধিক সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা প্রাথমিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। এ বিষয়ে নতুন কোনো তথ্য আছে কি না জানতে চান একজন সচিব। একজন সিনিয়র সচিব বলেন, অনেক ছেলেমেয়ে বিদেশে পড়াশোনা করে। একটা বাড়তি টেনশন আছে। ১৩ ব্যাচের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘আমি আমাদের সিনিয়র এবং আমাদের ব্যাচের অনেকের টেনশন দেখেছি। এ বিষয়ে অনেকেরই কোনো আগ্রহ নেই। সেখানে যারা সচিব আছেন তারা হয়তো নিজেদের খোঁজ করছেন। ভিসা নীতিমালা সম্পর্কে কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব বলেন, আমরা আদা মার্চেন্ট শিপ সম্পর্কে জানতে চাই না। অন্য কেউ কি ভাবছে তাতে কিছু যায় আসে না। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব বলেন, ‘হয়তো অনেক স্যার আমেরিকায় যাবেন বা যেতে চান, তাদের টেনশন থাকাটাই স্বাভাবিক। সে দেশে অনেক স্যারের সন্তান আছে। আমরা এই বিষয়ে চিন্তা করি না। আমরা মিড লেভেলের কর্মকর্তারা আমাদের ব্যাচের আগের ব্যাচেও এসব দেখিনি বা শুনিনি। যাইহোক, অনেকে ঘরে ঘরে এ নিয়ে কথা বলেন।

প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে অনেকেই চাপ অনুভব করছেন বলেও জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা ইস্যুতে কোনো চাপের বিষয়ে জানতে চাইলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোস্তফা কামাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি একজন সরকারি কর্মকর্তা। এই বিষয়গুলো আমার মাথায় নেই। বাংলাদেশ ভিসা নীতি করলে আমেরিকার একজন সরকারি কর্মচারী তা নিয়ে টেনশনে থাকবেন? যারা মনে করেন কঠিন হবে তারা টেনশনে ভুগতে পারেন। আমি সেটা জানি না। আমি মনে করি না একজন কর্মচারী এসব নিয়ে ভাববে।’ একজন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব নাম প্রকাশ না করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা নীতি এক নয়।

কেউ জানে না মার্কিন ভিসা নীতি কী, কারা এটির অধীন কারণ তারা এটি প্রকাশ করে না। সবাই কি আমেরিকান ভিসার আবেদন পায়? পায় না অনেক আবেদনকারীকে বিভিন্ন কারণে ভিসা দেওয়া হয় না। আমাদের দেশ থেকে অনেক দেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়া যায় না। কর্মকর্তাদের ওপর এই ভিসা নীতির কোনো চাপ আছে কি না জানতে চাইলে একে একে একে একেক রকম। যার আমেরিকা যাওয়ার কোন পরিকল্পনা নেই তার কাছে এটি কিছুই নয়। নির্বাচনের সঙ্গে যাদের কোনো সম্পর্ক নেই তারা কিছুই নয়। এবং আমরা জানি না যে নির্বাচনে কোনো ভূমিকার জন্য ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা জানি না কোনটি একটি বাধা হবে এবং কোনটি একটি বাধা হবে না। সচিবালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এবারের নির্বাচনের বিষয়টি ভিন্ন। এদিকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চাপের কারণে নির্বাচন কী হতে যাচ্ছে সেদিকে নজর রাখছে সবাই। আর ভিসা নীতিমালায় কার নাম নতুন তা জানার চেষ্টা চলছে। তবে প্রশাসনের যুগ্ম সচিব, উপসচিবসহ মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশ বলছেন, এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রশাসনে কোনো প্রভাব ফেলবে না। মাঠ প্রশাসন থেকে নির্বাচনের কাজ করা হয়। সেখানে সামান্য কিছু কর্মকর্তা নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করেন। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে শুধুমাত্র হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার যারা মাঠে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করে তাদের মার্কিন-সংযোগ থাকতে পারে। গোটা প্রশাসনের জন্য ছোটখাটো সম্পৃক্ততা বড় কথা নয়।

About Zahid Hasan

Check Also

মারা যায়নি আবু সাঈদ, আছেন ফ্রান্সে রনির এমন মন্তব্যে নিয়ে যা জানা গেল

সম্প্রতি টিকটকে পটুয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *